বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেট জেলার অন্যতম নেতা বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর ও সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল -সহ ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় আটককৃত শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট মৌলভীবাজার জেলার বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৪ অক্টোবর`২৫ শনিবার বিকাল ৪:৪৫টায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মঈনুর রহমান মগনু এবং সঞ্চালনা করেন জেলা সদস্য বিশ্বজিৎ নন্দী। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) মৌলভীবাজার জেলা নেতা জহর লাল দত্ত, বাসদ জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজিব সূত্রধর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর ও সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল স্বৈরাচার হাসিনার আমলে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া সকল অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে সিলেটের রাজনীতিতে সোচ্চার ছিলেন। শ্রমজীবী জনগণের সকল ন্যায়সংগত আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে জাফর, প্রণব সহ সিলেটের বামপন্থী নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময়ে অন্যায়ভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
ব্যাটারি রিকশার লাইসেন্স প্রদান সহ ৮ দফা দাবিতে গড়ে ওঠা দেশব্যাপী আন্দোলনের সংগঠন রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা আবু জাফর ও সিলেট জেলা সভাপতি প্রণব জ্যোতি পালের নেতৃত্বে সিলেটে রিকশার যৌক্তিক আন্দোলন গড়ে উঠে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনের ব্যাটারি রিকশা অন্যায় দমনের প্রতিবাদে ভিন্ন সংগঠনের গত ২৫ সেপ্টেম্বর`২৫ সিলেট শহরে `ব্যাটারি রিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ` ব্যানারে যে মিছিল বের হয় সেখানে জাফর-প্রণব সহ সংগ্রাম পরিষদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না। এমনকি উক্ত তারিখে আবু জাফর ঢাকায় বিলস এর দুই দিনব্যাপী এক সেমিনারে ছিলেন এবং সেখানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের দুইজন উপদেষ্টাও। সেইদিনে উপস্থিত না থেকেও ২৭ সেপ্টেম্বর সংগ্রাম পরিষদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পরবর্তী জেলা কার্যালয় থেকে পুলিশ কমিশনের সাথে সাক্ষাতের কথা বলে নিয়ে ২৫ তারিখে রিকশার মিছিল এবং ভাংচুরের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। নেতাদের দেখতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় শ্রমিক নেতা সৈকত ও রনি গেলে তাদেরকেও আটক দেখানো হয়। গত ২৯ তারিখ আবু জাফর, প্রণব জ্যোতি সহ আটককৃত চার জনের জামিন হলেও কারাগার থেকে ছাড়া হয়নি। জানতে চাইলে উক্ত নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হতে পারে বলে পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে জানানো মর্মে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ ছাড়তে পারবেন না বলে জানান। পরবর্তীতে নতুন করে আবার শ্রমিক নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা করা হলো।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার মাধ্যমে শ্রমিকদের জেলে আটকে রাখাটাই প্রমাণ করে প্রশাসন আবার নতুন করে আজ্ঞাবহ স্বৈরাচারে পরিনত হচ্ছে। শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে মামলা দিয়ে জেলে আটকে রেখে শ্রমজীবীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে নস্যাৎ করা যাবে না, বরং ইতিহাস বলে গত ২০২৪ সালের দিকে ফিরে চাইলেই বুঝতে পারবেন শ্রমজীবীদের সাহস ও ক্ষমতা কেমন তা পরিলক্ষিত হবে। ফলে সময় থাকতে শ্রমজীবীদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে এবং আবু জাফর, প্রণব জ্যোতি পালসহ ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আটককৃত নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :