ঢাকা রবিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৫

‘সমন্বয়ক’পরিচয়ে উত্তরায় বেপরোয়া আকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ০৩:৩০ এএম

‘সমন্বয়ক’পরিচয়ে উত্তরায় বেপরোয়া আকাশ

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

রাজধানীর উত্তরায় সমন্বয়ক পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে একটি চক্র। নিজেদেরকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে তল্লাশি, যে কাউকে আওয়ামী লীগের দোসর ট্যাগ দিয়ে মারধর, কিশোর গ্যাং পরিচালনা, মারামারি-হট্টগোলসহ নানা অভিযোগ উঠছে চক্রটির বিরুদ্ধে। এসব কারণে আতঙ্ক বিরাজ করছে উত্তরাবাসীর মধ্যে।

এ চক্রের মূলহোতা আসাদুর রহমান আকাশ। তার বিরুদ্ধে তিন সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাংবাদিক জাহাঙ্গীর কবির, সকালের সময় পত্রিকার সিটি রিপোর্টার মো. জোবায়ের আহমেদ ও বিজয় টিভি রিপোর্টার এ কে আজাদ।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উত্তরায় একটি রেস্টুরেন্টে দুই ব্যবসায়ীর দ্বন্দ্ব সংক্রান্ত সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে আসাদুর রহমান আকাশের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং গ্রুপটি সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনার পুরো সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে প্রতিবেদকের হাতে। ফুটেজে আকাশসহ তার সহযোগীরা মিলে চেয়ারে বসা সাংবাদিক জোবায়ের আহমেদসহ অন্যদের শারীরিকভাবে আঘাত করতে দেখা গেছে। উগ্র-মারমুখী অবস্থায় আকাশ নিজ বাহিনী নিয়ে একের পর হুমকি-ধামকি ও মারধর করছে চেয়ারে বসা সাংবাদিক জোবায়ের আহমেদসহ অন্যদের। সেই সাথে সাংবাদিক জুবায়েরের গলা টিপেও ধরতে দেখা গেছে তাকে। এ ছাড়া পিছন থেকেও যোবায়ের আহমেদকে মারধর করতে দেখা গেছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেন, আকাশ সন্ত্রাসী কায়দায় রেস্টুরেন্টে ঢুকেই তুইতোকারি করে সবার নাম জানতে চায়। এ সময় আকাশের পরিচয় জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক জোবায়ের আহমেদকে এলোপাতারি মারধর করেন আকাশ। একই সাথে তার সাথে থাকা লোকজন সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। এ সময় আকাশ বাহিনীর সদস্যরা ভুক্তভোগী সাংবাদিকদেরকে চেয়ারে বসিয়ে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’আখ্যা দিয়ে ভিডিও করে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও ভিডিওতে প্রকাশ পাওয়া মারধরের ঘটনায় আসাদুর রহমান আকাশের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, পুরো ভিডিও পুনরায় দেখে তাকে প্রশ্ন করার কথা জানান তিনি। এরপর তিনি আর যোগাযোগ করেননি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূখ্য সংগঠক ওমর ফারুখ বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। সংবাদমাধ্যমের ওপর কোনো হামলা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধেই হামলার বহিঃপ্রকাশ। তাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে—তিন সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। দ্রুত অভিযোগ খতিয়ে ব্যবস্থা নিতে পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জকে বলা হয়েছে। বক্তব্যে- মব কালচারও প্রতিহত করার কথা জানান তিনি।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!