আমাদের হাতে সময় নেই, ৫০ হাজার টাকা না দিলে রাজুর মত তোমাকে মরতে হবে, তাই বলছি ভুল যেন না হয়।
এরকম ভাবেই চিঠি দিয়ে মোকাদ্দেস হোসেন খান সঞ্চয় নামে এক যুবককে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত বুধবার ২৯ অক্টোবর ভোরের দিকে গ্রিলের ভিতর দিয়ে ভুক্তভোগী সঞ্চয়ের বাড়ির বারান্দায় কে বা কাহারা হাতে লেখা ওই চিঠিটা রেখে আসে। এরপর এলাকায় টপ অব দি ভিলেজে পরিণত হয় বিষয়টি। অনেকে আতঙ্কিত বলে দাবি করলেন।
স্পর্শকাতর এই ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার দুর্গাপুর খান পাড়া গ্রামে। মোকাদ্দেস হোসেন খান সঞ্চয় ওই গ্রামের মৃত মোতাহার হোসেন খানের ছেলে।
একটি গাইড বইয়ের কভারে হাতে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়,,,
সঞ্চয় 
ছোট ভাই আশা রাখি ভাল আছ। ভাই আমাদের হাতে সময় নেই, তাই বলছি আগামী ৫ তাং ৫০ হাজার টাকা আমাদের কে দিতে হবে। তা না হলে রাজুর মত তোমার কিন্তু মরতে হবে, তাই বলছি ভুল যেন না হয়। পড়ে (পরে) ৫ লক্ষ টাকা দিলেও আমাদের প্রয়োজন হবে না। রাজুর কাছে কিন্তু ৩ লক্ষ টাকা ছিল আমরা নেই নাই। কারণ সে তাং মিছ করছে এবং গোপনে তোতথো (তথ্য) জানার চেষ্টা করেছিল যার কারণে তাকে বিদায় করে দিয়েছি। তাই তোমাকে বলছি ভুল যেন না হয়। আগামী ৫ তাং টাকা একটি ব্যাগে করে তোমার বাড়ীর গেটের শিরির পূর্ব সাইটে রাখবে। রাত ২/৩ টার সময় নিয়ে আসবো। কোন রকম চালাকী করার চেষ্টা কর, তাহলে ভাই তোমার সব কিছু পড়ে থাকবে শুধু থাকবে না তুমি। দেহ এক জায়গায় মাথা এক জায়গায় থাকবে। তাই বলছি ৫ তাং যেন মিছ না হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মোকাদ্দেস হোসেন খান সঞ্চয় মুঠোফোনে বলেন, আমি সকালে ঘুম থেকে উঠেই বারান্দায় ওই চিঠি দেখতে পাই। বুধবার ভোরের দিকে কে বা কারা গ্রিলের ভিতর দিয়ে ফেলে দিয়ে যায়। চিঠিটা হাতে পেয়ে ওইসব লেখা দেখি। এরপর বিষয়টি স্থানীয় সামিউল আলম তুষারসহ এক বড় ভাইকে জানায়। তাদের পরামর্শে প্রশাসন কে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদিও আমি ভীত বা আতঙ্কিত নয়। তারপরও বিষয়টি এলাকার জন্য খারাপ। এবং বিষয়টি সেনসেটিভ। আশা করছি প্রশাসন তাদের টেকনোলজি ব্যবহার করে এই চিঠির জট উদঘাটন করবে। আর যে বা যারা এসব ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বিষয়টি শুনেছেন বলে জানালেন স্থানীয় সামিউল আলম তুষারসহ অনেকে। তারা বলেন, সঞ্চয়কে চিঠি দিয়ে হুমকি দেওয়ার এই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কারণ ইতিপূর্বে এই এলাকায় ২০০৫ সালে রাজু নামের এক যুবককে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সেসময় রাজুর মাথার মগজ গাছের ডালে ঝুলছিল। যার কারণে বিষয়টি সহজ ভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা পার্শ্ববর্তী স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে আছি। তাই আমরা স্থানীয় হিসেবে দাবি করছি এই ঘটনা যে বা যারা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
তারা আরও বলেন, সঞ্চয় আমাদেরকে সকালে বিষয়টি অবগত করে। এরপর আমরা তাকে প্রশাসনের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এই বিষয়টির সুরাহা হওয়া উচিৎ। কারণ চিঠি দিয়ে হুমকি দেওয়া এই বিষয়টি কারো কাম্য নয়। এছাড়া ইতিপূর্বে এই এলাকায় রাজু নামের যে যুবককে হত্যা করা হয়েছিল তার দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ছিল।
এদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাফিজ মো. রায়হান মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি মৌখিক ভাবে শুনেছি। পুলিশ সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে আসবে। আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
উল্লেখ, গত ২০০৫ সালে পার্শ্ববর্তী কাজিপাড়া এলাকার রাজু নামের এক যুবক কুজাইল বাজার থেকে ভ্যানযোগে বাড়ি যাওয়ার পথে কুজাইল বালিকা বিদ্যালয় এলাকায় পৌঁছামাত্রই নিহত হয়। সেসময় নিহতের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এবং মাথার মগজ একটি গাছের ডালে ঝুলছিল বলে স্থানীয়রা জানান।

 
               
             
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
                                           
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার মতামত লিখুন :