ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে প্রকৃত আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নেয়নি কেউ: এক বছর পার হলেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম

জুলাই আন্দোলনে প্রকৃত আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নেয়নি কেউ: এক বছর পার হলেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
 

“সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই মূল্য দিতে হয়েছে মৌলভীবাজার সাংবাদিকরা। স্বীকৃতি না পেলেও ইতিহাস তো থাকবেই। ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মৌলভীবাজার শহরে ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের দিনটি আজও অনেকের মনে তাজা। সেদিনের সাংবাদিকও ছিলেন নির্যাতনের শিকার। গত ৪ আগস্ট আন্দোলনের এই স্বৈরাচার হাসিনা পতন গণঅভ্যুত্থানে যারা মৌলভীবাজার জেলায় সাংবাদিকরা অবস্থান করেন। গুলির মুখে দাড়িয়ে, স্বৈরাচার হাসিনাকে এই বাংলাদেশের থেকে বিতারিত করতে লিখে ও প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনা বৃদ্ধি করে আওয়ামীলীগের দোসরদের এই মৌলভীবাজার থেকে বিতারিত করেছে। আজ তারা অবহেলীত। 
জানা য়ায়,জুলাই বিপ্লবের এক বছর পার হলেও মৌলভীবাজার জেলায় জুলাই আন্দোলনে ত্রিমুখী হামলায় আহত সাংবাদিকদের খোঁজ না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেক আহত ও ক্ষতি গ্রস্থ সাংবাদিক আন্দোলনে গুলির মুখেও সংবাদ সংগ্রহে পিছপা হননি তারা। জুলাই আন্দোলনের এক বছর পার হলেও তাদের সেই ত্যাগের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪ আগস্ট সকাল থেকে শহরে বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় মিছিল আর সংঘর্ষ চলছিল। টিয়ার শেলের ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু হলে অনেক সাংবাদিকের মাথায়, পায়ে, পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এসময় সাংবাদিকদের ধারন করা মারধোরের অনেকে ছবিও রয়েছে। উপস্থিত সময়ে অনেকের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতির কারনে আহত সাংবাদিকরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেননি। অনেকে বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত সংবাদকর্মীরা জানান বিগত ৪ আগষ্টে আমাদের সহকর্মী কয়েকজন আহত ছিলাম। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে অনেক ফুটেজ  ও ছবি আছে। যারা আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার দোস্বরদের সাথে হাত মিলিয়েছে, পুলিশের সাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কৌশল বিনিময় করেছে। আজ এই সাংবাদিকগন পুরুস্কার পাচ্ছে। বড় কর্তা সাথে যাদের ভালো সম্পর্ক এরাই জুলাই আহত সাংবাদিক স্বীকৃতি পাচ্ছেন। আমাদের মতো যে সাংবাদিকরা নিজের জীবন বাজি রেখে ৪ আগষ্ট আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহে ছিলাম আমাদের সাথে বৈষম্য করা হয়েছে। ছাত্র জনতার গনঅভূতানে কোটা আন্দোলনের ১৬ জুলাই শুরু থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত আমরা মাঠে ছিলাম। ছাত্র জনতার নিউজ কাভার করতে গিয়ে যান-মালের উপরে হামলা হয়। আমার মোটর বাইক ভাংচুর হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থান সহ  মাথায় আঘাত লেগেছে। কিন্তু  যারা বাসায় বসেছিল গনঅভ্যুত্থানে তাদের কে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। ছাত্র জনতার নিকট যারা ছিল ভূয়া, তারা আজ আহত জুলাই যোদ্ধা সাংবাদিক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মৌলভীবাজার এর প্রতিনিধি শাহ মিসবাহ বলেন, ৪ আগষ্ট আন্দোলনে আমার যারা নেতৃত্ব দিয়েছি, এবং যে করুন দৃশ্য গুলো আমরা দেখেছি। আমাদের সাংবাদিক তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিউজ কাভার করেছেন। এবং সঠিক তথ্য গুলো তুলে ধরতে গিয়ে যাদের উপর আক্রমণ হয়েছে। যারা জুলাই গনঅভ্যুত্থানে সঠিক তথ্য তুলে ধরেছেন। তারা ও এক যুদ্ধা। তাদেরকে ও তথ্য প্রমাণের উপর নির্ভর করে জুলাই সনদ দেওয়া হোক।
মৌলভীবাজার জেলার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন ৪ আগষ্ট যে মৌলভীবাজার জেলার সাংবাদিকরা নিউজ কাভারেজ করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আবার অনেক সাংবাদিক পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, পুলিশকে সাহায্য সহযোগীতা করেছে। জুলাই আন্দোলন হয়েছিল বৈষম্য দূর করার জন্য। বৈষম্য দূর হয় নাই, বৈষম্য হয়ে গেছে।
মৌলভীবাজার  তথ্য অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কাছ থেকে প্রত্যাযন নিতে হবে। উনারা যে মেডিকেল চিকিৎসা নিয়েছেন তার একটা প্রত্যায়ন প্রয়োজন  হবে। যার আহত হয়েছে তারা ডিসি স্যার বা ইউএনও স্যারের মাধ্যমে আবেদন করেছেন। 
মৌলভীবাজার  সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের বিষয়ে আমি বলবো ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করেছে। এর পাশাপাশি এই আন্দোলনের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি ও কাভারেজ করেছেন। এই ছাত্র আন্দোলনের অনেক সাংবাদিকরা আহত হয়েছে। আহত হয়েছে তাদেরকে আমরা এ বি সি ডি এ ক্যাটাগরির ভিতর সাংবাদিক রয়েছেন। যারা স্বৈরাচার সরকারের নিউজ করেছে এবং আমাদের ছাত্র জনতার আন্দোলনের পক্ষে কাজ করেনি। স্বৈরাচারীর পক্ষে কাজ করেছে তারা স্বৈরাচারীর পক্ষে গিয়ে আঘাত হয়েছে আমরা তাদেরকে রাখবো না।
 

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!