হাওরের স্থানীয় মাছ ও জলজপ্রাণ বাঁচাতে অবিলম্বে চায়না দুয়ারি জাল বন্ধের দাবি উঠেছে নেত্রকোনায়। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী এই অবৈধ জালের ব্যবহার বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ ও নিয়মিত তদারকির আহ্বান জানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা প্রেসক্লাবের সামনে ‘গ্রিন কোয়ালিশন’ ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বারসিক’-এর আয়োজনে এবং ‘এগ্রোইকোলজি ফান্ড’-এর সহযোগিতায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দ রিজওয়ানা হাসানের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন ‘প্রকৃতি বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি তানভীন জাহান চৌধুরী, জেলে সংগঠন ‘জানমা’র সভাপতি যোগেশ চন্দ্র দাস, জেলা ‘গ্রিন কোয়ালিশন’-এর সহসভাপতি সাংবাদিক আলপনা বেগম, ‘সেভ দ্য এনিমেলস অব সুসং’-এর সভাপতি রিফাত আহমেদ রাসেল, সাংবাদিক মির্জা হৃদয় সাগর, লেখক সোহরাব উদ্দিন আকন্দ, সমাজকর্মী মৃণালকান্তি চক্রবর্তী এবং বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী পরিবেশ কর্মী মো. অহিদুর রহমানসহ কৃষক, জেলে, কিশোর-কিশোরী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা।
বক্তারা বলেন, চায়না দুয়ারি জাল হাওরের বাস্তুতন্ত্রের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি। এই জালের ফাঁক অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ায় বড়-ছোট সব ধরনের মাছই এতে আটকা পড়ে যায়। ফলে ডিমওয়ালা মাছ, পোনা মাছ, চিংড়ি, কচ্ছপ, ব্যাঙ, কাঁকড়াসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী নির্বিচারে মারা যাচ্ছে। এতে মাছের প্রজনন চক্র ব্যাহত হচ্ছে এবং হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
তারা বলেন, চায়না দুয়ারি জাল অবৈধ ও নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। এ কারণে মৎস্যসম্পদ হুমকির মুখে পড়েছে। বক্তারা এই জালের উৎপাদন, বিক্রি, আমদানি, রপ্তানি, বুনন ও সংরক্ষণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, হাওর, নদী, খাল ও বিলে এই নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার রোধে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা ও মৎস্য অফিসের তদারকি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দ রিজওয়ানা হাসানের নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন জেলা গ্রিন কোয়ালিশন কমিটির সদস্যরা।

আপনার মতামত লিখুন :