কুমিল্লার বুড়িচংস্থ আল-হেরা মডার্ণ একাডেমির দুই যুগ পূর্তি উৎসব উপলক্ষে মিলনমেলা, ইতিহাস- ঐতিহ্য কেন্দ্রীক নান্দনিক স্মরণিকা প্রকাশ, গুণীজন সম্মাননা, ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টার স্মৃতি বৃত্তি প্রদান ও পরলোকগত মুরব্বীদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে বুড়িচং মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, কোটা সংস্কারে রিটকারী সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব বদরুল হাসান লিটন। প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব সাইফুল হাসান রিপন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ফাতেমা আক্তার ডলি ও মালয়েশিয়ায় উচ্চতর শিক্ষায় অধ্যয়ণরত শাহরিয়ার নাফিস সজীবের যৌথ সঞ্চালনায়
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তানভীর হোসেন, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের উপ সচিব মো. আবদুল কাদির, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র এসিসস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আজহারুল ইসলাম, বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মো. দেলোয়ার হোসেন, জগতপুর এডিএইচ সিনিয়র মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. ছফিউল্লাহ এবং বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মিয়া আনোয়ার মোর্শেদ।
ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিসিএস (কৃষি) কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন গালিব, বিসিএস (স্বাস্থ্য) ডা. নূর মোহাম্মদ সুমন, রহমত উল্লাহ সাকিব, ইঞ্জিনয়ার আল আকসার, তরিকুজ্জামান অন্তর, ছাত্র সমন্বয়ক জামিলুর রহমান তানিম, আবদুর রহমান রুমেল, ডা. একেএম আবদুল বাছেদ, ঢাকা মেডিকেলে কর্মরত ডাক্তার আল আমিন খান, মাকসুদা আক্তার মুন্নী, মাসুদুল ইসলাম, গোলাম সামদানি জুয়েল, ইঞ্জিনিয়ার নিগার সুলতানা নিপা, আবদুল জব্বার, মোমিনুল ইসলাম শাকিল, সোহেল আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার ফোরকান আহমদ ও ইঞ্জিনিয়ার সাইদুল ইসলাম মিঠু প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বুড়িচং উপজেলার প্রাচীন কিন্ডারগার্টেন স্কুলটির সর্বাঙ্গীণ সফলতা ও উন্নয়নে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, শিক্ষা হলো জীবনকে সুন্দর ও সাফল্যময় করার সিঁড়ি। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি যে এগিয়ে যাচ্ছে আজকের এই অনুষ্ঠানে বিসিএস ক্যাডার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখেই অনুধাবন করা যায়। তিনি বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া জনপদকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা অনন্য ব্যক্তিত্ব ও চারবারের সাবেক এমপি অধ্যাপক মো. ইউনূস ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্যারের প্রিয় শিক্ষক ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টারসহ গুনী শিক্ষকদের নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি জুলাই আন্দোলনে শহীদদের আকাঙ্খা পূরণে একযোগে দেশের তরে কাজ করবার জন্য তরুণ সমাজের প্রতি আহবান জানান।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল অদুদ বলেন, আমার জীবনের দীর্ঘ সময় এবং অনেক অর্থ এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য ব্যয় করেছি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে আজ তার ছাত্ররা দেশের ভালো জায়গায় প্রতিষ্ঠিত বলে তিনি গর্বিতবোধ করেন। তিনি স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে ডাকসুর সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মরহুম অধ্যাপক মো. ইউনূস ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ মাকসুদুর রহমানের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি ২৭ জন বিসিএস ক্যাডার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও সেনা কর্মকর্তাসহ কৃতি শিক্ষার্থী ও ১৪জন গুনী শিক্ষককে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে হেরার জ্যোতি নামে একটি মনোমুগ্ধকর স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং সাবেক এমপি অধ্যাপক মো. ইউনূস ও ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম, মোখলেছুর রহমান লিল মিয়া সর্দার ও আবদুল খালেক মাস্টারসহ স্কুলের সাথে সম্পৃক্ত পরলোকগত উপদেষ্টা ও শিক্ষকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। শেষে বিসিএস ক্যাডার (কৃষি) সাখাওয়াত হোসেন গালিবকে সভাপতি ও ইঞ্জিনিয়ার সাইদুল ইসলাম মিঠুকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট আল-হেরা মডার্ণ একাডেমি এলামনাই এসোসিয়েশনের কমিটি গঠিত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :