লেখক, গবেষক ও মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিক বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. ইকরামুল হক খান।
আজ এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, “বদরুদ্দীন উমর ছিলেন এদেশের স্বাধীন বিবেকের এক প্রতীক।”
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত বদরুদ্দীন উমর রোববার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
শোকবার্তায় ইকরামুল খান বলেন, “মরহুম বদরুদ্দিন ওমর বারবার রাজরোষে পড়া সত্ত্বেও আদর্শ বাস্তবায়নে ছিলেন আপসহীনভাবে স্থির। কোনো ভীতি বা হুমকি তাকে নিবৃত্ত করতে পারেনি তার কর্তব্যকর্ম থেকে। স্বৈরতন্ত্রকে উপেক্ষা করে তিনি তার স্বাধীন মতামত প্রকাশে কখনোই কুণ্ঠিত হননি।”
১৯৩১ সালে ২০ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার বাবা আবুল হাশিম ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স শেষ করার আগেই দর্শন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর। ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ এবং ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে তিনি যোগ দেন। তার হাত দিয়েই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা হয়।
তিনি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী।
এক সময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে সভাপতির দায়িত্ব নেন।
বদরুদ্দীন উমরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “বামপন্থী প্রগতিশীল রাজনীতির পথিকৃত, লেখক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমরের জীবনাবসানে বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি ও আমি গভীরভাবে মর্মাহত। স্বাধীনচেতা, নির্ভিক কণ্ঠস্বরের এই বুদ্ধিজীবীর এই মুহূর্তে পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া জনমনে হতাশার সৃষ্টি করেছে।
“জনগণের সম্মান ও নিদারুণ বেদনাকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি এবং সেটিকে প্রতিবাদের ভাষায় মূর্ত করতে পারতেন মরহুম বদরুদ্দীন উমর। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা এবং সকল স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রয়াত বদরুদ্দীন উমরের চিন্তা ও লেখনিসহ সক্রিয় তৎপরতা ছিল অবিস্মরণীয়।”
ইকরামুল খান বলেন, “জাতির নানা ক্রান্তিকালে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পর্ব নিয়ে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থসমূহ এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে পাঠক সমাজের নিকট সমধিক সমাদৃত।”
আপনার মতামত লিখুন :