দাবি পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে এক মাসের আলটিমেটাম দিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত এমপিও শিক্ষকরা।
বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে ‘দৃশ্যমান ও যৌক্তিক’ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমাবেশস্থলে এ ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের নেতারা।
এ ঘোষণা দেন জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। সচিবালয়ে যাওয়া শিক্ষকদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলে তিনিও ছিলেন।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, এক মাসের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অর্ধদিবস এবং ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালান করা হবে। তাতেও না হলে ১২ অক্টোবর থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
সদস্য সচিব বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়ি ভাড়া ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করে ডিউ লেটার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় আমাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
তারা বলেছেন, সব দাবি একবারে পূর্ণ করা সম্ভব নয়। আমরা এই দাবিগুলো পূরণে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে তা নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব। প্রস্তাব রেখেছি, আমাদের বাড়ি ভাড়া পার্সেন্টেজ হিসেবে বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করে অর্থ মন্ত্রণালযয়ে পাঠানো হবে। চিকিৎসা ভাতা ৫০০ থেকে ১০০০ করা হবে। আমরা এই বিষয় নিয়ে আর বেশি কিছু বলিনি। আমরা বাড়ি ভাড়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। যদি আমাদের দাবিগুলো মেনে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার পাঠানো না হয় তাহলে আমরা নতুন কর্মসূচিতে যাব।
শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হলো
আজ বেলা দেড়টার দিকে সমাবেশস্থল থেকে ১০ শিক্ষক নেতা সচিবালয়ে যান। তারা শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে শিক্ষকদের জানানো হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সর্বজনীন বদলি নিয়ে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সভায় বসেই এ কমিটি করার ঘোষণা দেন উপদেষ্টা।
সভা সূত্র জানায়, সর্বজনীন বদলি কমিটির সভাপতি করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমানকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (মাধ্যমিক-২) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীকে। এ ছাড়া সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে সদস্য রাখা হয়েছে।
সভায় অংশ নেওয়া শিক্ষক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষা উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সর্বজনীন বদলি ও বাড়িভাড়ার বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। শিক্ষকদের বাড়িভাড়া কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রস্তাবনা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৈঠকে শিক্ষকরা জানান, তারা এ নিয়ে আলোচনা করে বাড়িভাড়া কীভাবে বাড়ানো যাবে, তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেবেন।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বাড়ি ভাড়া টাকা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াগুলো যৌক্তিক উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা তা ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
আপনার মতামত লিখুন :