মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরবাজার শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোনের পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয়-লেন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এসব জমির ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের অভিযোগ, অধিগ্রহণকৃত জমি বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে তিনগুণ কম টাকায় পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে ব্রাম্মণগাঁও মৌজার এসব জমির মালিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ জন্মেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে সম্প্রসারণের জন্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরবাজার শেরপুর ব্রিজ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার ৮ একর ব্যক্তির মালিকানাধিন জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয়-লেন প্রকল্পের আওতায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরবাজার শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোনের পাশে ব্যক্তি মালিকানাধিন জমি অধিগ্রহনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এতে শেরপুর ব্রিজ থেকে শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোনের সম্মুখ পর্যন্ত ব্রাম্মণগাঁও মৌজার প্রায় ৮ একর জমি সাম্প্রতিক সময়ে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়। অধিগ্রহণকৃত এসব জমিতে তিন শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, মার্কেট ও দোকানপাট রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অধিগ্রহণ চলাকালে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিলো বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে ক্ষতিগ্রস্তদের জমি অধিগ্রহণের টাকা পরিশোধ করা হবে। এরইমধ্যে অধিগ্রহণের টাকা বুঝে নিতে জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহণ শাখা ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের নোটিশ দেয়া হচ্ছে। এ নোটিশে অধিগ্রহণ করা প্রতি শতক জমির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ২১ হাজার টাকা। অথচ স্থানীয়দের দাবি, ব্রাম্মণগাঁও মৌজার শেরপুরবাজার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও আশপাশ এলাকায় জমি ও ভিটা প্রতি শতক বিক্রি হয়ে আসছে, ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায়।
দাবি আদায়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবি,জমির দাম পুনঃনির্ধারনের। এরইমধ্যে জমির দাম পুনঃনির্ধারণে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
এছাড়াও ভিটা শ্রেণির প্রতি শতাংশ জমির দাম রয়েছে, প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা। এতে বিধি অনুসারে তিনগুণ মূল্যে প্রতি শতক জমির দাম দাঁড়ায় সাড়ে ২২ লাখ টাকা। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের তিনভাগের একভাগ মূল্যে জমির দাম ধরে টাকা পরিশোধের নোটিশ দেয়া হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছেন এলাকাবাসি।
ব্রাম্মণগাঁও মৌজার ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক জাহাঙ্গীর খান ও মো. শিপনসহ একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাদের সবার একটাই কথা সরকার নির্ধারিত জমির দাম দিয়ে তারা কোনভাবেই পরবর্তীতে বাড়িঘর তৈরি করতে পারবেন না। কাজেই সরকারে কাছে পুনঃবিবেচনা করার দাবি জানিয়েছেন।
এরইমধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পুনঃনির্ধারণের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনঃবাসনের জন্যে সড়ক বিভাগ থেকে একটি উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনার কথা ভাবছে জেলা প্রশাসন। পরিকল্পনাটি তদন্তের পর ভালো বলা যাবে।
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর কি করা যায় তা বলা যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :