ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার উত্তর–পূর্ব সীমান্তবর্তী মানকি ও সুন্দর গ্রামজুড়ে বিষখালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে মানুষের বসতভিটা, কৃষিজমি ও স্মৃতিবিজড়িত ভিটেমাটি। নদীর গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম, অথচ নেই কোনো কার্যকর প্রতিরোধ উদ্যোগ।
উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের আওতাধীন সুন্দর গ্রামটি আজ প্রায় বিলুপ্ত। নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলের জমি, বিদ্যালয়সহ স্থাপনা। এখন মাত্র একটি বাড়ি টিকে আছে— সেটিই গ্রামের অস্তিত্বের শেষ চিহ্ন।
স্থানীয় নাপিতেরহাট ফকিরবাড়ি এলাকার বহু মানুষ ইতোমধ্যে বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছেন। নদীভাঙনের ফলে মানকি গ্রামের শত শত পরিবার এখন চরম দুর্ভোগে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে। জীবিকার অনিশ্চয়তায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও কৃষিজীবীরা।
খরস্রোতা বিষখালী নদীর ভাটির টানে প্রতিদিন ভেঙে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গত কয়েকদিন ধরে মানকি, সুন্দর ও বাদুরতলা এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী তীরের মানুষ আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন, যে কোনো মুহূর্তে ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার শঙ্কায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, বারবার প্রশাসনকে জানালেও এখনো নদী রক্ষা বাঁধ বা জিও ব্যাগ ফেলার মতো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে তাদের মনে হতাশা আর ক্ষোভ দুটোই বাড়ছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, নদীভাঙনে জমি-ঘর সব গেছে, এখন পরিবার নিয়ে কোথায় যাব বুঝতে পারছি না। সরকার যদি কিছু না করে, সামনে হয়তো পুরো মানকি গ্রামটাই নদীতে মিলিয়ে যাবে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, অবিলম্বে জরুরি ভিত্তিতে নদী রক্ষা প্রকল্প না নিলে রাজাপুরের মানকি ও সুন্দর অঞ্চল মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :