ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

শ্রীমঙ্গলে একই রাতে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ০৮:১১ পিএম

শ্রীমঙ্গলে একই রাতে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি

ছবি বর্তমান বাংলাদেশ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং উপজেলার বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে চলছে। গতকাল গভীর রাতে শহরের হবিগঞ্জ রোডের বড় দুইটি এবং মৌলভীবাজার রোডের বড় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্র্ধষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা দোকানগুলোর তালা ভেঙে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, বিভিন্ন মালামালসহ চার লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া একই রাতে শহরতলীর উত্তর ভাড়াউড়া ও শহরের মাস্টারপাড়া এলাকায় দুইটি বাড়িতে চুরি সংঘঠিত হয়েছে। এসময় চোরেরা নগদ অর্ধলক্ষাধিক টাকা, তিনটি মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। হবিগঞ্জ রোডের রহমান স্যানিটারী ওয়ার এর ম্যানেজার শাহিন মিয়া জানান, গতকাল রাতে চোরেরা তাদের দোকানের তালা ও ছাটার ভেঙ্গে দোকান থেকে নগদ দেড় লাখ টাকাসহ সাড়ে তিন লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। মৌলভীবাজার রোডের কাশেম স্টোরের আকিব আহমেদ জানান, গতকাল সকালে  দোকানের সত্ত¡াধিকারী ও কর্মচারিরা দোকানে গিয়ে দেখেন এই দোকানের ছাটাওে লাগানো ৫টি তালা ভাঙ্গা ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর। গভীর রাতে চোরেরা দোকানের তালা ভেঙ্গে নগদ ২৫ হাজার টাকাসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। হবিগঞ্জ রোডের সপ্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর এর কর্মচারি কৃষ্ণ উড়ান জানান, গতকাল রাতে চোরেরা দোকানের বড় দুইটি এসির পাইপ চুরি করে নিয়ে যায়। শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার বাসিন্দা সচেতন নাগরিক কমিটি-টিআইবি শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য জানান, গতকাল ভোর ৩টার সময় তার বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে আলমিরার ড্রয়ার ভেঙ্গে চোরেরা নগদ ৫০-৬০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। তার মেয়ের জামাই রাজিব ভট্টাচার্য রাতে হটলাইনের জরুরি ৯৯৯ নম্বরে পুলিশী সহযোগিতা চাইলে পুলিশ জানায় ওই রাতে আরো কয়েকটি স্থানে চুরির ঘটনা নিয়ে পুলিশ ব্যস্ত, সকালে আসবে। কিন্ত গতকাল শনিববার বেলা ২টা পর্যন্ত পুলিশের কেউ ঘটনাস্থলে আসেনি। এর আগে গত শুক্রবার রাতে শহরতলীর মণিপুরী রামনগর এলাকার শিক্ষক হাবিবুর রহমানে বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা রাতে রান্না ঘরের চিমনি দিয়ে প্রবেশ করে আলমিরা ও সুকেসের ড্রয়ার ভেঙ্গে ৩ ভরি স্বর্ণ, মাটির ব্যাংকে ও ব্যানিটি ব্যাংক ভেঙ্গে নগদ ৪০হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। হাবিবুর রহমান জানান, আমার বাসার চুরির ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় গত ১৫ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের দুইদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। এর আগেও আমার বাসা থেকে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটে। এসময় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত থানা থেকে কোনো ধরণের রেসন্স পাইনি। শুক্রবারের চুরির ঘটনায় পুলিশী তৎপরতা নিয়ে তিনি ক্ষোভ এবং অসন্তুষ প্রকাশ করেন। এছাড়া একই এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় সরকারি প্রাথকি বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিনের বাসায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা তালা ভেঙ্গে বাসায় প্রবেশ করে আলমিরার ড্রয়ার ভেঙ্গে পাঁচ ভরি স্বর্ণ, ১ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার আইফোন ১৬ প্রোম্যাক্স মোবাইল ফোন, এবং নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও চোরকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে গত ৫ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফেরার পথে ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হন আফজল মিয়া এবং ফয়সল মিয়া নামে দুই ব্যবসায়ী। এসময় তাদেরকে ছুরিকাঘাত তাদের সাথে থাকা টাকার ব্যাগসহ নগদ ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এ ছাড়া চলতি মাসে শহর-শহরতলী থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। উপজেলায় চুরি-ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সচেতন মহলের দাবি একের পর এক চুরি হলে শহরে আইন শৃংখলার আরো অবনতি ঘটবে। 
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, গত মাসে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আসামীকে আমরা গ্রেফতার করেছি। আর চুরির ঘটনাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করছি প্রতিটি চোরের ঘটনায় জড়িত চোরগুলোকে শেনাক্ত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব। জরুরি নম্বরে ফোন করে কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চোর পালিয়ে যাওয়ার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানিছে ভুক্তভোগী পরিবার। তবে চুরির ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয় হবে।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!