নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় রাজন মিয়া (২৭) নামের এক যুবককে ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার পুখলগাও গ্রামের মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে সুলতান মিয়া (৩০) এবং মৃত হাসেন আলীর ছেলে হারেছ উদ্দিন (৪৪)।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে গত ২১ অক্টোবর উপজেলার পুখলগাঁও এলাকায় পরিত্যক্ত ভয়লার মিলের পেছনের পুকুরে রাজনের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে নিহতের বাবা আবুল কালাম তালুকদার লাশটি শনাক্ত করেন। পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা আবুল কালাম তালুকদার বাদী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
এদিকে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল বুধবার রাতে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সুলতান মিয়া ও হারেছ আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে হারেছ উদ্দিন স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী রাজন মিয়া উপজেলার দেশীউড়া গ্রামের আবুল কালাম তালুকদারের ছেলে। তিনি উপজেলার কৃষ্ণপুর চৌরাস্তায় চায়ের দোকান চালাতেন।
পুলিশ জানায়, নিহত রাজন আর গ্রেপ্তার সুলতান ও হারেছসহ তিন জনই মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। ঘটনার প্রায় দুই মাস পূর্বে সুলতান মিয়া দুই কেজি গাঁজাসহ আটক হন। এ ঘটনায় সুলতান জেল থেকে বের হয়ে রাজন পুলিশকে তথ্য দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে বলে দোষারোপ করে।। এই নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক হয় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ১৯ অক্টোবর রাতে রাজনকে একাধিকবার ফোন করে পুখলগাঁও এলাকায় পরিত্যক্ত ভয়লার মিলের পেছনে যেতে বলে সুলতান। রাজন দোকানে অন্য লোক রেখে সেখানে যায়। এসময় হারেজ উদ্দিনও সেখানে যায়। তখন সুলতান গ্রেপ্তারের পর থেকে জামিনে আসা পর্যন্ত তার সকল খরচের টাকা দাবি করে রাজনের কাছে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে হারেছ তাকে মারধর করে। এ সময় সুলতান ও তার অপর তিন সহযোগী রাজনকে এলোপাথারীভাবে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে সুলতান তার কোমর থেকে একটি ধারালো ছুরি বের করে রাজনের মাথায় আঘাত করতে থাকে। আঘাতের এক পর্যায়ে রাজন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে রাজনের মৃতদেহ পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। হারেছ উদ্দিন আদালতে রাজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে এসব কথা জানায়।
পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, গ্রেপ্তার হারেছ উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অপর তিন সহযোগী আসামি পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ছবি- গ্রেপ্তার সুলতান মিয়া ও হারেছ আলী ।

আপনার মতামত লিখুন :