ঢাকা শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

মৌলভীবাজারে একটি সন্ত্রাসীর হাতে ৮ শতাধিক হিন্দু পরিবার জিম্মি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০২:৪২ পিএম

মৌলভীবাজারে একটি সন্ত্রাসীর হাতে ৮ শতাধিক হিন্দু পরিবার জিম্মি

ছবি বর্তমান বাংলাদেশ

মৌলভীবাজার ১০ নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ঘোড়াচাও গ্রামে এক সন্ত্রাসী পরিবারের নিকট ৮ শতাধিক হিন্দু ও পরিবার জিম্মি হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত  ঘোড়াচাও গ্রামে অরুন বিশ্বাসের বাড়ি এক উঠান বৈঠকে এব্যাপারে প্রতিবাদ সভার করে এলাকাবাসী। 
দুই শতাধিক এলাকাবাসী প্রতিবাদ সভায় জানা যায়, দশকাহনিয়া গ্রামের মৃত খালিক মিয়ার ছেলে মনির মিয়া, মুমিন মিয়া গং এর দীর্ঘ দিন ধরে আশ পাশ এলাকার গ্রামের লোক তার বাড়ির পাশ দিয়ে হাইল হাওরে যেতে গেলে তাকে চাঁদা দিতে হয়। হাইল হাওরে ক্ষেতের অন্যের ধান কেটে গরুকে খাওয়ানোর জন্য জোড় পুর্বক নিয়ে যায়। কেহ প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা সহ মারধোর করেন। এমনকি বাড়িতে এসেও হুমকি দিয়ে যান। এব্যাপারে ঘোড়াচাও গ্রামের ভাদগাঁও তাহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক অভিনাশ বিশ্বাস তাদের এই কর্মকান্ডের বিষয় মৌলভীবাজার জেলা প্রসাশক, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার, অফিসার ইনচার্জ সদর মডেল থানা বরাবরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি। 
ভুক্তভোগী ঘোড়াচাও গ্রামের ভাদগাঁও তাহেরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক অভিনাশ বিশ্বাস বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের সময় থেকে অন্যায় ভাবে আমার এবং এলাকার লোকজনে ধানের জমি হতে জোর পূর্বক কেটে নিয়া যায়। কেহ কোন কথা বললে তাহাদেরে চাঁদা দিতে হয়। তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় ২৯/১০/২০২৫ইং তারিখে বিদ্যালয়ের কাজে মৌলভীবাজার শহরের আসার জন্য মোটরসাইকেলের পথ অবরোধ করে হুমকি প্রদান করেন। বিগত ৩১/১০/২০২৫ইং আমার ভাই অধির বিশ্বাস ধান কাটতে দেখে প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করে। স্থানীয় চেয়ারম্যান নিকট বিচার প্রার্থী হলে চেয়ারম্যান তাদেরে অফিসে ডাকলেও আসেনি। বছরের পর বছর তারা দাপটের সাথে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত আওয়ামীলীগ নেতাদের ছত্র ছায়ায় নিরীহ হিন্দু ও মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালায়। ইদানিং তাদের চাহিদা মতো চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষেতের ডিপ টিউবওয়েলের সেচ মেশিনের মটর, ১৫ শত ফুট ওয়ার, একটি ঠেলা গাড়ি, অন্যান্য যন্ত্রাংশ খোলে নিয়ে যায়। 
এলাকারবাসী সুব্রত দেবনাথ, শ্রীধর দেবনাথ বলেন, দোকানে কারেন্ট বিল বিকাশে পরিশোধ করে টাকা না দিয়ে চলে যায়। টাকা চাইলে হমকি দেয়। 
কালা চাঁন দেবোনাথ,পুলিন বিশ্বাস, রাজেন্দ্র বিশ্বাস, আলা মিয়া, রিপন মিয়া, নকুল মাষ্টার, করুনা দেবোনাথ, নেপাল সরকার, নেপাল দেব, শ্রীনাথ দেবোনাথ, ইসলাম মিয়া, শাহিন মিয়া, চেরাগ মিয়া বলেন, আমরা হিন্দু মুসলিম এলাকায় মিলে মিশে চলি। কিন্তু মনির মিয়া, মুমিন মিয়া, ইসলাম মিয়া সংঙ্গবদ্ধ দল। তাদের বাড়ির নিকট দিয়ে হাওরে যেতে হয়। ওদেরে চাঁদা না দিলে রাস্তা আটকায়, ধান কেটে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে মারধোর করে। ভয়ে কেহ কিছু বলতে চায়না। কারো দায় কেউ নিতে চায়না। কেহ শত্রু হতে চায়। এর একটি প্রতিকার হওযা দরকার।
ভুক্তভোগী অধির বিশ্বাষ বলেন, ৩১ অক্টোবর জমির সেচের অবস্থা দেখার জন্য গেলে মনির মিয়া, মুমিন মিয়া গং ধান কাটা অবস্থায় দেখতে পেয়ে বাধা প্রদান করলে তারা দৌড়ে এসে গলায় কাচি দিয়ে প্রণে হত্যার চেষ্টা করে। আমাদের প্রায় ৪০ বিঘা জমি হাইল হাওরে রয়েছে।আওয়ামীলীগ সরকারের আমল থেকে আমাদের কোন কৃষক হাওরে ক্ষেত করতে গেলে তাদেরে তাদেরে চাঁদা না দিয়ে পাকাঁ ধান নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। এখনও আমরা প্রায় ৮ শতাধিক হিন্দু তাদের নিকট জিম্মি হয়ে আছি। আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট আবেদন করেছি। 
অভিযোগের  বিষয়ে মনির মিয়া, মুমিন মিয়া  সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি ।
এব্যাপারে ১০ নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আশরাফ আহমেদ বলেন, অরুন বিশ্বাস আমার ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে মামলা দিয়েছিল। আমি অদ্য রোজ বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষকে ডেকে বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি আগামী বৃহস্পতিবার সমাধান হয় যাবে।
মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী মো: মাহবুবুর রহমান মুঠেফোনে যোগাযোগ করলে রিসিভ করেননি ।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!