পূর্ণিমার আলোয় রঙিন হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ। পাহাড়ঘেরা এই জনপদ এখন মুখর মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলায়। বর্ণাঢ্য আয়োজন, রাখালনৃত্য, রাসনৃত্য আর হাজারো ভক্তের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব। মূল রাসলীলা রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার জীবনকে নিয়ে নৃত্যে গীতের মধ্য দিয়ে ভোরে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।
জানা যায়, প্রতিবছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। পূর্ণিমার আলোয় মণিপুরিদের এই ঐতিহ্যবাহী নৃত্য যেন মানবপ্রেম ও ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। ১৮৪২ সালে কমলগঞ্জের মাধবপুরে প্রথমবারের মতো এই মহারাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বর্ণাঢ্য আয়োজন আর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব Í শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরের মণিপুরি অধ্যুষিত জনপদ এখন মুখরিত রাসোৎসবের আমেজে।
৫ নভেম্বর বুধবার সকাল থেকেই মাধবপুর শিববাজারের জোড়া ম-প ও আদমপুর মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। দুপুরে গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্য এবং রাতে রাসনৃত্য এই উৎসবের মূল আকর্ষণ। ভোরে শেষ হবে শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা। উৎসব উপলক্ষে উভয় স্থানেই বসেছে বিশাল মেলা। হাজারো ভক্ত, দর্শক ও দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কমলগঞ্জের মণিপুরি পাড়া।
দর্শনার্থীরা জানান বৃহত্তর সিলেটের আদিবাসী মণিপুরি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় এ উৎসবে এবারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মাধবপুরে ১৮৩তম এবং আদমপুরে ৪০তম মহারাস উৎসব। উৎসবের দিন রাখালনৃত্য আর রাতে শুরু হয় শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলাÍযেখানে অংশ নেন শ্রীকৃষ্ণ, রাধা ও প্রায় ৫০ জন গোপী। ঐতিহ্যবাহী পোশাক আর সুরের মূর্ছনায় ভোর পর্যন্ত চলে কৃষ্ণবন্দনা।
কমলগঞ্জ মণিপুরী মহারাস উৎসববের, সাধারণ সম্পাদক শ্যামা কান্ত সিংহ বলেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন নিয়েছে তিন স্থরের ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও র্যাব।
মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিংক:মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন ভক্তি,সৌন্দর্য আর সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে এই মহারাস উৎসব এখন শুধু মণিপুরি সমাজের নয়, সবার উৎসব।

আপনার মতামত লিখুন :