কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শিমুলীয়া গ্রামে ছোট বাচ্চাদের ঝগড়া নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও বাড়ির মালিক মো. কাজল মিয়ার হাতের চারটি আঙ্গুল কেটে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার (০৯ আগস্ট) রাতে আহতের স্ত্রী পারভিন বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তুলে নিতে বাদীকে হুমকি-ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগও উঠেছে।
এদিকে মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোয় নিরাপত্তাহীনতায় বাদী। আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেছেন আহতের স্ত্রী মামলার বাদী পারভিন। এর আগে গত শুক্রবার (০৮ আগস্ট) রাতে সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শিমুলীয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল মেম্বার এর ছেলে মোঃ তুষার (২০) ও তার পিতা মৃত পাষাইন্যার ছেলে বিল্লাল মেম্বার (৪৮), আকবর আলীর ছেলে মোঃ বাবুল মিয়া (৪০) ও তার ছেলে মোঃ বায়েজিত (২১), শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মধুর ছেলে মোঃ আজহারুল ইসলাম (৩৫), মো. রমজান মিয়ার ছেলে মোঃ তুহিন (২০) এর নেতৃত্বে ২০/২২ জনের একটিল সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদল এ হামলা চালায়।
সংঘবদ্ধ দলটি পারভিন তার স্বামী কাজল ও পুত্র মো. রাকিবের উপর ঘরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে কাজলকে রামদা দিয়ে কোপ দিয়ে বাম হাতের চারটি আঙ্গুল কেটে জখম করে। এসময় পারভিন তার স্বামী কাজল ও ছেলে মো. রাকিব ঘর থেকে দৌড়ে উঠানে আসলে আসামি তুষারের হাতে থাকা বোতলের পেট্রোল বসতঘরে ছিটিয়ে দেয় এবং আসামি বাবুল ম্যাচ দিয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের বাড়ির মানুষ ছুটে আসে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে স্থানীয়রা।
আগুনে ঘরে থাকা আসবাবপত্র, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও একটি মোটরসাইকেল পুরে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দাবি আগুনে পুরে প্রায় ১২লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি৷ এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা বসত ঘরে আগুন লাগিয়ে যাওয়ার পথে পার্শ্ববর্তী মোঃ মানিক চৌকিদারের মুদির দোকান এবং তার ছেলের একটি চৌচালা টিনের ঘরের বেড়া রামদা দিয়ে কুপিয়ে নষ্ট করে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মামলার বাদী পারভিন বলেন, ঘটনার চারদিন পার হয়ে গেলও পুলিশ একজন আসামিও ধরতে পারিনি। আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তারা বিভিন্ন উপায়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে বলেন, উল্টো তারাই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আগে ঝগড়া করেছে আমাদের সাথে৷ এখন আবার মিথ্যা মামলাও দিচ্ছে৷
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে পরিদর্শন করে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :