এক সময় দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন তোতা আলী মন্ডল। তার কাঁধেই ছিল পাঁচ সদস্যের পরিবারের ভার। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে ১৪ মাস আগে ধার-দেনা করে সৌদি আরবে চলে যান তোতা। ভাগ্যের পরিহাসে মাত্র এক বছর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তার হার্টে ব্লক ধরা পড়লে পরিবারের লোকজন আবারও ধার-দেনা করে টাকা পাঠিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অসুস্থ থাকায় অর্থের অভাবে চিকিৎসা ও ওষুধ কিনতে পারছে না তার পরিবার। বর্তমানে তিনি বাড়িতে হুইল চেয়ারে বসে কাতরাচ্ছেন। এমন দুর্দশায় চিকিৎসার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে তার পরিবার। অসুস্থ তোতার বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রামপুরা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ওসমান আলী মন্ডলের ছেলে। প্রতিবেশীরা রুবেল হোসেন বলেন, দেশে থাকতে তোতা কখনও রাজ মিস্ত্রি আবার কখনও রঙ মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতেন। অভাবের সংসার হলেও স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুখেই ছিলেন। কিন্তু সন্তানদের ভবিষ্যতের চিন্তা আর সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে তিনি বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর বিভিন্ন এনজিও এবং আত্মীয়-স্বজননের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে সৌদি আরবে যান। সেখানে গিয়ে রঙ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেন। প্রায় ৯ মাস কাজও করেছেন। কিন্তু রঙের গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে চিকিৎসার পর হার্টে ব্লক
ধরা পড়ে। তোতার স্ত্রী রুমি বেগম বলেন, অসুস্থ স্বামীকে চিকিৎসা করানোর জন্য ধার-দেনা করে গত পহেলা অক্টোবর দেশে ফিরিয়ে এনেছি। এরপর বগুড়া ও ঢাকায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে যা কিছু ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা চালাতে পারছি না। এমনকি নতুন হুইল চেয়ারের টাকাও নেই, পুরাতন হুইল চেয়ার মেরামত করে চালাচ্ছি। সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা সাহায্য করলে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হতো। তোতার ছেলে বাপ্পি বলেন, বাবার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এখন ঠিক মতো কথা বলতেও পারছেন না। চিকিৎসকরা বলেছেন অপারেশন করাতে পারলে তিনি সুস্থ হতে পারেন। আদমদীঘি উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আল-আমিন বলেন, আমাদের অফিসে একটি লিখিত আবেদন দিলে তার চিকিৎসার জন্য কিছু আর্থিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। তাছাড়া ইউএনও বরাবর আবেদন করলে নতুন হুইল চেয়ারের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।

আপনার মতামত লিখুন :