১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতার সাক্ষী, নওগাঁর আত্রাইয়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক বান্দাইখাড়া বধ্যভূমি। যেখানে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। বধ্যভূমির স্মৃতিফলক ও শহিদ মিনারের ঠিক সামনেই সৃষ্ট ত্রিমুখী মোড়টি বর্তমানে স্থানীয়দের কাছে পরিচিতি পেয়েছে এক বিপজ্জনক "মৃত্যুর ফাঁদ" হিসেবে।
বধ্যভূমির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে নির্মিত হয়েছে শহিদ মিনার ও স্মৃতিফলক। কিন্তু আত্রাই নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজ, স্থানীয় বাজার এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা রাস্তা-এই তিনটি পথ বধ্যভূমির মূল ফটকের সামনে এসে মিশে তৈরি করেছে এক জটিল ত্রিমুখী মোড়। এই মোড়েই নিত্যদিন তীব্র যানজট ও দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
ব্রিজের উপর থেকে, বাজারের ভেতর থেকে এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো একইসঙ্গে মোড়ে প্রবেশ করায় প্রায় সময়ই সংঘর্ষের উপক্রম হয়। মোড়ের কাছাকাছি অবস্থিত ইটের ঘর এবং রাস্তার স্বল্প প্রস্থতা পরিস্থিতিকে আরও শোচনীয় করে তুলেছে।
বিশেষ করে, আত্রাই নদীর ব্রিজের দিক থেকে আসা রাস্তাটি অতিরিক্ত খাড়া হওয়ায় ঝুঁকি আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায়শই ভারি ও দ্রুতগতির যানবাহনের ব্রেক ফেল করে নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঘটনা ঘটছে। এই নিত্যনৈমিত্তিক দুর্ঘটনাগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিনই মানুষ প্রাণ হাতে নিয়ে এই মোড় দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।
এলাকাবাসী এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে দ্রুত মুক্তি চাইছেন। তারা জানান, যে বান্দাইখাড়া মোড় শহিদদের আত্মত্যাগের প্রতীক, সেটির পরিবেশ উন্নত করে একটি নিরাপদ ও সুসংগঠিত এলাকা গড়ে তোলা জরুরি। তাদের মূল দাবিগুলো হলো মোড়টিকে নিরাপদ ও দুর্ঘটনা মুক্ত করা, সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন যানবাহন চলাচলের স্বার্থে রাস্তার পাশে সিএনজি, অটো-রিক্সা স্ট্যান্ডের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করা।
এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই ঐতিহাসিক বধ্যভূমির মোড়ের দিকে নজর দেবে এবং শহিদদের স্মৃতি রক্ষার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

আপনার মতামত লিখুন :