নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র চারজন শিক্ষার্থী। চারজনই ফেল করেছেন। বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ মোট ১২ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও গত দুই বছর ধরে এসএসসিতে পাসের হার শূন্য।
২০২৪ সালে এই বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয় দুই শিক্ষার্থী, তারাও পাস করতে পারেননি। এবার অংশ নেয় চারজন, ফল একই সবাই ফেল।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টির একাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়া যায় ২০১১ সালের জানুয়ারিতে। কাগজপত্র অনুযায়ী, এখানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৫ জন। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। মাঠে গরু-ছাগল বাঁধা রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ঠিকমতো উত্তোলন হলেও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান প্রায় নেই বললেই চলে।
বিদ্যালয়টি প্রায় সময়ই তালাবদ্ধ থাকার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, বিদ্যালয় কাগজে-কলমে চলছে, বাস্তবে নেই কোনো পড়াশোনা। তবে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ঠিকই উত্তোলন হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, স্কুলে ক্লাস হয় না বললেই চলে। মাসের পর মাস তালাবদ্ধ থাকে। মাঝে মধ্যে দু-একজন শিক্ষক আসলেও শিক্ষার্থীদের দেখা মেলে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার হাবিব সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে তার বাসায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। সহকারী প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, এবার চারজন পরীক্ষার্থী ছিল। কেউ পাস করেনি।
উপজেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্র জানায়, পরপর দুই বছর এসএসসিতে ফল শূন্য হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
ডিমলা উপজেলার সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, গত বছরও দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তারাও ফেল করে। এবার চারজন অংশ নেয়, তারাও উত্তীর্ণ হয়নি। কেন এমন ফল হচ্ছে, সেটা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
আপনার মতামত লিখুন :