জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর :
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে রিনা আক্তার (২৭) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের হক মার্কেট সংলগ্ন বেঁড়ীর উপরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে রামগতি থানার পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
নিহত রিনা কমলনগর উপজেলার পাটওয়ারীরহাট ইউনিয়নের ওমান প্রবাসী জয়নাল আবদিনের স্ত্রী।
ঘটনার সাথে জড়িত হেলাল নামের এক ব্যক্তি বলে জানা যায়। হেলাল কমলনগর উপজেলার চর ফলকন ইউনিয়নের পলোয়ান বাড়ির মো: শাজাহানের ছেলে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, রিনা একজন প্রবাসীর স্ত্রী জানতে পেরে মোটা অর্থ হাতিয়ে নিতে বহু দিন থেকেই কয়েকজন মিলে নিহত রিনার পিছু নেয়। বিগত প্রায় ৮/১০ মাস পূর্বে রিনার সাথে অভিযুক্ত হেলালের পরিচয় হয় হাজিরহাট বাজারের একটি কম্পিউটার দোকানে। হেলাল সাংবাদিক এবং থানার সোর্স পরিচয়ে ওই নারীর পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই রিনার বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়। এক সময় রিনার মাকে ধর্মের মা বলে পরিবারের সদস্য হয়ে যায় । গত ০২ (দুই) মাস পূর্বে রিনাকে তুষার ভবনের একটি রুমে আসতে বললে বিশ্বাস করে ধর্মের ভাইয়ের কথামত সেখানে আসলেই এক পর্যায় রিনাকে জিম্মি করে খুনি হেলাল ধর্ষনের ভিডিও ধারন করে রাখে। এই ভিডিওর ভয় দেখিয়ে নানা সময় রিনার থেকে মোটা অংকে টাকা হাতিয়ে নেয়। ঘটনার শুরু থেকেই হেলালের সাথে বিভিন্ন সময় চলাফেরা করা কয়েজজন সহযোগী জড়িত ছিল। যাদের ছত্রছায়ায় হেলাল নানা অপরাধ করে আসছে বলে বিশেষ সুত্রে জানা যায়। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে এই চক্রটি এভাবেই প্রতারনার জাল বিস্তার করে আসছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার সারা রাত ধর্ষনের পর ভোর ০৫টার সময় হাজিরহাট বাজারের উত্তর মাথায় হেলালের সাথে রিনাকে দেখতে পায় স্থানীয় নাইট গার্ড।
ঘটনার দিন বুধবার ভোরে হেলাল তার মোটরসাইকেলে করে রিনাকে নিয়ে নোয়াখালীতে রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে তাদের মধ্যে ধর্ষনের ধারনকৃত ভিডিও নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা জড়ো হলে তারা সেখান থেকে কেটে পড়ে। সেখান থেকে কিছুদুর যাওয়ার পর দ্রুতগতির মোটরসাইকেল থেকে পেছনে বসা রিনাকে ছিটকে ফেলে দিলে মাথায় আঘাত পেয়ে ক্ষনিকের মধ্যে ঘটনাস্থলেই রিনার মৃত্যু হয়। ঘটনার জের ধরে চারদিক থেকে স্থানীয়রা ছুটে আসলে হেলাল দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ এসে রিনার মরদেহ থানায় নিয়ে সঠিক তথ্য উদঘাটন করার লক্ষ্যে ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরন করেন। ময়না তদন্তে রিনাকে ০৪ মাসের গর্ভবতী হওয়ার প্রমান পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে রিনার ভাই খুনি হেলালের ফাঁসি ও সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন,পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষন ও হত্যা মামলা করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি সুক্ষভাবে তদন্ত করছে এবং খুনিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আপনার মতামত লিখুন :