বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান শনিবার (১৮ অক্টোবর) মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে লিফলেট বিতরণে অংশ নেন। তার এই আকস্মিক উপস্থিতিতে জনসাধারণের কাছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও জনস্রোত লক্ষ্য করা গেছে।
বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সদর উপজেলার তিনি ৯ নং আমতৈল ইউনিয়নের দীঘিরপাড় বাজার, দামিয়া বাজার এবং কনকপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজার ও বুদ্ধিমন্তপুর বাজারে সাধারণ ভোটার, ব্যবসায়ী ও যুবকদের সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগ করেন।
সাধারণ জনতা তাকে কাছ থেকে দেখার জন্য এগিয়ে আসে, অনেকেই মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। নাসের রহমান দোকানী ও পথচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং দলের পক্ষে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বার্তা পৌঁছে দেন। উপস্থিত নেতাকর্মীরাও লিফলেট বিতরণে তার সঙ্গে সহায়তা করেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নাসের রহমান জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন- কোনো দলের বিভ্রান্তিতে যাতে না পড়েন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আগামী দিনে বাংলাদেশে নতুন রাজনীতি চালু করবে। এই যে জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশে গনতন্ত্রের যেসব গর্ত তৈরী হয়েছিল এসব গর্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ইনশাআল্লাহ আগামীতে দেশে জনগণের খেদমতের যে সরকার সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কারণ আরেকটা যে দল মাঠে আছে তারা তো কখনো সরকার গঠনের ক্ষমতাই নেই তাদের।
এম নাসের রহমান বলেন- আমরা বিগত বিএনপি সরকারের আমলে যা উন্নয়ন করে দিয়ে গিয়েছিলাম মৌলভীবাজারের উন্নয়নে তেমন আর কিছু বাকি ছিল না। এই বার যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গ্রামীণ অবকাঠামো রাস্তাঘাট গুলোর যে অবস্থা এর জন্য বিশাল একটা প্রোগ্রাম নিতে হবে। আমরা যে সমস্ত গ্রামীন জনপদের রাস্তা ঘাট করেছিলাম ইউনিয়নে থানায় ওয়ার্ড লেভেলে। আমরা তো ওয়ার্ড লেভেলে পর্যন্ত রাস্তা করে দিয়েছিলাম। এই গুলি তো আর সংস্কার হয়নি। আজকে তো ১৬ / ১৭ বছর হয়ে গেছে। রাস্তার তো সংস্কার দরকার। এইটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এর মধ্যে মানুষের জনসংখ্যা বাড়ছে। সুপেয় বিশুদ্ধ পানির চাহিদা বাড়ছে। আমাদের একটা প্ল্যান করে ডিপ টিউবওয়েল বসানোর উদ্যোগ নিব যাতে যেখানে যেখানে ডিপটিউবয়েল দরকার সেখানে দেয়া হবে।
তিনি বলেন - আগের সরকার শিক্ষার মান একেবারে নীচে নামিয়ে দিয়ে গেছে। এই শিক্ষার মানটাকে আবার স্ট্যান্ডার্ড লেভেল নিয়ে আসা হবে। গত ১৫/১৬ বছরে অবৈধ হাসিনার সরকারে শিক্ষার মান কিভাবে ১২টা বাজিয়ে দিয়ে গেছে। এগুলোর উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন - মৌলভীবাজারের উন্নয়নে আমার দেখামতে রাস্তাঘাট হল মেইন জিনিস। পৌরসভা টাকে উন্নয়ন করা। এবার অন্য কাজে হাত দিব। মৌলভীবাজারে আমরা এয়ারপোর্ট বানাবো। শমসের নগর এয়ারপোর্ট। এর জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে রেললাইনের টিকিট পাওয়া যায় না। আমরা ক্ষমতায় গেলে ঢাকা টু শ্রীমঙ্গল। শ্রীমঙ্গল টু ঢাকা। সিলেটের লাইনে আরেক ট্রেন যাবে। মৌলভীবাজারের জন্য ডেডিকেটেড ট্রেনে দেয়া হবে।
নাসের রহমান বলেন - এখন হলো ম্যাক্রো ডেভেলপমেন্ট।
মাইক্রো ডেভেলপমেন্টের দিন শেষ। ম্যাক্রো ডেভলপমেন্টে হাত দিব ইনশাআল্লাহ। আর গ্রামগঞ্জে স্বাস্থ্য সেবা সুবিধা বাড়ানোর জন্য আড়াইশো শয্যা হাসপাতালটিকে আমরা আরও উন্নয়ন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি এনে এবং এটার সংস্কার করবো। ভালো ডাক্তার যদি না থাকে বিল্ডিং বানিয়ে কি লাভ হবে। আগে এটার ভালো ডাক্তার নার্স নিশ্চিত করবো। মেডিকেলের সকল উন্নত যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা হবে। যাতে কোথাও যেতে না হয়।
নাসের রহমান বলেন - আমরা এই আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে কার্ডিওলজিষ্ট থাকতে হবে। হার্টের রোগী,ক্যান্সারের রোগীর সকল ধরনের স্পেশালিষ্ট ডাক্তার থাকতে হবে। এই গুলি হলো চ্যালেঞ্জিং বিষয়।
তিনি বলেন - আমরা গত সরকারের আমলে এই হাসপাতালে বড় বড় যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এই আওয়ামী লীগ সরকারে এসব মেশিন নিয়ে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ আর মাদারীপুর নিয়ে গেছে। এম আর আই মেশিন এক্সরে মেশিন খুব দামী দামী কোটি কোটি টাকার দামী মেশিন নিয়ে গেছে মৌলভীবাজার হাসপাতাল থেকে।
লিফলেট বিতরণে অংশ নেন- জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মুকিত,বকসি মিসবাউর রহমান,মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক বদরুল আলম,সদর উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান মজনু,সাধারণ সম্পাদক মো. মারুফ আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিউর রহমান সফি,সাংগঠনিক সম্পাদক কাজল মাহমুদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মুহিত, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবিদুর রহমান সোহান,মৌলভীবাজার সরকারী কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক জনি আহমদ সহ স্থানীয় বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নাসের রহমানের সরাসরি জনগণের কাছে যাওয়া তৃণমূলকে নতুন শক্তি দিয়েছে। জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া সম্ভাব্য নির্বাচনকে ঘিরে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
যেখানেই তিনি যান, সেখানেই ভিড় জমে যায়। উপস্থিত জনতা ‘বেগম খালেদা জিয়া’, ‘তারেক রহমান’, ‘সাইফুর রহমান’, ‘নাসের রহমান’ স্লোগান দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান এবং ধানের শীষে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আপনার মতামত লিখুন :