ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

বারহাট্টায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা, সালিসে মিমাংসার নামে টালবাহানা

নেত্রকোণা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম

বারহাট্টায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা,  সালিসে মিমাংসার নামে টালবাহানা

ছবি সংগৃহীত

নেত্রকোনার বারহাট্টায় চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত সুমন মিয়া পলাতক রয়েছেন।

এ ঘটনা স্থানীয়ভাবে সালিসে মিমাংসার নামে সপ্তাহধরে টালবাহানা করছেন  এলাকার কয়েকজন।
এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ওই গৃহবধূর পরিবার।

উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামে গত ২৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পরে ওই গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

অভিযুক্ত যুবকের নাম সুমন মিয়া (৩২)।  তিনি উপজেলার চন্দ্রপুর (পুর্বপাড়া) গ্রামের  নুর ইসলামের ছেলে। সুমন বিবাহিত দুই সন্তানের জনক।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ  চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকজন।

আজ মঙ্গলবার ঘটনা জানতে চন্দ্রপুর গ্রামে গেলে এলাকার লোকজন জানায়, ওই গৃহবধূ তাঁর শাশুড়ির সাথে ঝগড়া করে ওইদিন সন্ধ্যার পর বাবার বাড়িতে যাওয়ার জন্য একাই গ্রামের রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে রওয়ানা দেন। পথে একই গ্রামের সুমন মিয়া ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠায়। পরদিন গৃহবধূর পরিবারের লোকজন অভিযুক্ত সুমনকে বাড়িতে না পেয়ে তার বাবা নুর ইসলামকে লাঞ্ছিত করেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাসুর ও চাচা শ্বশুরসহ পরিবারের লোকজন জানায়,  ভুক্তভোগী গৃহবধূ চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এক বছর আগেই তাঁর বিয়ে হয়েছে।  অসুস্থ ছোট বোনকে দেখতে ওইদিন রাতে একাই পায়ে হেঁটে মোহনগঞ্জ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন ওই গৃহবধূ। পথে তেলিকুড়ি এলাকায় পথ আটক গলায় ছুরি ঠেকিয়ে  ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায় সুমন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূ চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

পরিবারের লোকজন আরও জানায়, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্যরা সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি শেষ করার কথা বলে সময় ক্ষেপন করছে। তারা এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।

ঘটনাস্থলের পাশে থাকা চা দোকানি রুকন মিয়া বলেন, ওই রাতে ঘটনার কিছু সময় আগে আমার দোকানেই চা খেয়েছে সুমন। পরে গিয়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার পর দ্রুত ঘরে গিয়ে ঘুমানোর অভিনয় করে সুমন। গৃহবধূর মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন সুমনকে ঘরে থেকে ডেকে আনে। পরে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুমন ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা  স্বীকার করেছে। তবে ঘটনার পরদিন থেকে সুমন এলাকা ছেড়েছে। ছেলেটা কাজটা খারাপ করলেও তার বাবা নুর ইসলাম সহজ সরল মানুষ। ছেলের অপরাধে বাবাকে লাঞ্ছিত করা ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি (সিংধা ইউনিয়ন) চেয়ারম্যান নাসিম উদ্দিন তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আপোস বা সালিস মিমাংসার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।

বিষয়টি অবহিত করলে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, এ বিষয়কে এখনো  কেউ কিছু আমাকে জানায়নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!