প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পর্যটননগরী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। তবে কলেজ সড়কের একটি বৃহৎ এলাকাজুড়ে থাকা দীর্ঘদিনের ময়লার ভাগাড় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য জনস্বাস্থ্যের বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাগাড়টির পাশেই রয়েছে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস্ রেসিডেনসিয়্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দুটি মসজিদ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ঘনবসতি এলাকা। দুর্গন্ধ ও দূষণে দীর্ঘদিন বিপাকে আছেন সবাই।
দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ না হওয়ায় অবশেষে রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ওই ময়লার ভাগাড়ের প্রধান গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ করে বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধ ও বর্জ্যের বিষাক্ত উপাদান পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। আমরা অনেক মানববন্ধন করেছে, স্মারকলিপি দিয়েছে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছে কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।
স্থানীয়রা আরও বলেন, ১৯৩৫ সালে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রতিষ্ঠার সময়। তৎকালীন ভাড়াউড়া চা বাগান রোডসংলগ্ন এলাকাকে শহরের ময়লা ফেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনবসতি তৈরি হলে পরিস্থিতি ঘনীভূত হয়। সমস্যার সমাধানে ২০১৩ সালে শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের জেটি রোড এলাকায় হাইল হাওরের পাদদেশে ২ দশমিক ৪৩ একর জমি ক্রয় করে পৌরসভা। তবে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরোধিতায় ভাগাড় স্থানান্তর কার্যক্রম থেমে যায়।
সম্প্রতি বিগত আওয়ামী সরকার পরিবর্তনের পর শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আন্দোলন আবারও তীব্র হয়। চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভের পর অবশেষে আজ ভাগাড়ে তালা দেওয়া হলো।এলাকাবাসীদের দাবি, ভাগাড়টি দ্রুত স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করতে হবে এবং বিকল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ইসলাম উদ্দিন বলেন, ময়লার ভাগাড়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এটি স্থানান্তরের জন্য আমরা কাজ করছি। প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা সমস্যাটির সমাধান করব।

আপনার মতামত লিখুন :