ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

মৌলভীবাজারে মনুনদী বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ঝুঁকিতে শতাধিক বাড়িঘর

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫, ১১:৩০ এএম

মৌলভীবাজারে মনুনদী বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ঝুঁকিতে শতাধিক বাড়িঘর

ছবি বর্তমান বাংলাদেশ

মৌলভীবাজারের জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরাবাজার ইউনিয়নের মনু নদীর বন্যা রক্ষা প্রকল্পের আওতায় আদনাবাজ, টগরপুর, কোনাগাঁও নামক স্থানে অপরিকল্পীত বল্ক ফেলায় লক্ষাধিক মানুষ রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। বর্ষা মৌসুমের আগে বাঁধ নির্মাণের কাজ ধীর গতিতে শঙ্কিত নদীপাড়ের বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ অপরিকল্পীত ভাবে বালু উত্তলোন করার কারনে ধ্বসে পড়ে নদীর পাড়। সেই সঙ্গে আবাদি জমি, বসতভিটা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে। বর্ষা মৌসুমের  রাজনগরে উপজেলায় অসম্পন্ন মনু নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ নিয়ে চরম আতঙ্কে স্থানীয়রা।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যার কবল থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে মনু নদী খনন সহ বাঁধে সিমন্টের বল্ক ফেলছেন ঠিকাদারের মাধ্যমে। মনু নদী পাড়ের ভুক্তভোগীরা বরাবরই অতীতের সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করছেন। ভাঙ্গন রোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে শতাধিক বাড়িঘর নদীতে তলিয়ে যাবে।
জানা যায়, বিগত ২০২৩ সাল থেকে নদীর খনন কাজ সহ বল্কের কাজ চলছে। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে বল্ক না ফেলে কোন কোন স্থানে স্তুপ করে রেখে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এর ফলে যে কোন সময় নদীর পানি বাড়লে বা বর্ষা মৌসুমে দুর্বল বাঁধ ভেঙ্গে যাবে। বছরের পর বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছে না। আর নদীর পানি বাড়লে বা বর্ষা মৌসুম এলে সময় বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলসহ পানি নেমে এলেই পানির অস্থিতিশীলতার কারণে মনু নদের বাঁধের কোথাও না কোথাও ভাঙ্গন দেখা দেয়। প্রকল্পটির কাজ আংশিক শেষ হয়েছে। তার মধ্যে বিভিন্ন স্থান ক্ষতিগ্রস্ত। অরক্ষিত এই প্রতিরক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন অংশে সংস্কারকাজ করা সম্ভব হয়নি। এ পর্যন্ত মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন রোধে সামান্য ব্লক ও জিও ব্যাগ কিছু কিছু স্থানে ফেলা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ গত বছরের ক্ষয়ক্ষতির কথা মাথায় রেখে পানি উন্নয়ন বোর্ড আগাম ব্যবস্থা নেয়ার কথা, কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ভোক্তভুগীরা জানান, কিছু এলাকায় সিমেন্টের ব্লক ফেলে, বালুর বস্তা ফেলে হয়েছে।‘কোনো জায়গায় সিমেন্টের ব্লক নেই, আবার বস্তা নেই। সরকারি টাকার কোনো মূল্য নেই তাদের কাছে।  দেড় বছরের উপর হয়ে গেছে ব্লক আজও কোনো কাজ হয় না। আগামী বর্ষাকাল আসতেছি বর্তমানে এখন বর্ষাকাল নয় তারপরে নদীর পাড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে চলে আসতেছে । যেদিকে নদী ভাঙ্গন নয় সেদিকে ব্লক ফালানো হয়েছে,আর যেদিকে বেশি ভাঙ্গন হয়েছে সেই দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন নজরে নেই। আমার বাড়িঘর মনে করেন এক হাজার ফুট ছিল, এখন রয়েছে প্রায় দেড়শ ফুট। ব্লকগুলো সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হতো আমরা এই লাঞ্ছিত হতাম না। আগামী বর্ষা মৌসুমে বন্যা থেকে বাঁচতে পারতাম। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে আজকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বারবার যদি ঘরবাড়ি ভাঙ্গে তাহলে বাঁচব কী করে? কেউ আমাদের কথা শোনে না। 
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ বলেন, গাড়ি যাওয়ার জন্য রাস্তা করা দরকার! আর রাস্তাটা কিন্তু ব্যক্তির মালিকানার ওপর। যেহেতু ব্যক্তির মালিকানা, সেহেতু জায়গায় দিবেনা। সেক্ষেত্রে আমরা ব্লক করতে পারি নাই। খুব শীর্ঘই কাজ শুরু করতে পারব। দুবছর আগেই আমাদের ব্লক গুলো বানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা ব্লক গুলো ডাম্পিং কাজ করতে পারব। এবং আশা করতে আমরা এই সূক্ষ মৌসুমেই ব্লক ডাম্পিং এবং প্রেসিং  কাজ শেষ  করতে পারব। সপ্তাহ ২/১ এর মধ্যে আমরা কাজ শুরু করব। কাজটা বাস্তবায়ন হলে ভাঙ্গনের সমস্যা থাকবে না। টিকাদারের কোনো ভুল নাই, ভুল হল আমরা জায়গা দিতে পারি নাই।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!