রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগ।
ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো-জাহাঙ্গীর আলম (৩৪) ও ফরহাদ হোসেন (২৬)।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তুরাগ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের দাবি- গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে হিজবুত তাহরীর, বাংলাদেশ এর মিডিয়া সমন্বয়কারী ইমতিয়াজ সেলিম, সদস্য মো. মঈন ও মো. জাকারিয়াসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জন রাজধানীর পল্টন মোড় থেকে বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড সহকারে মিছিল করে প্রেসক্লাবের দিকে আসতে থাকে। মিছিল করাকালীন হিজবুত তাহরীর এর সদস্যরা বাংলাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠা, কালো আইন বাতিল, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দিতে থাকে। তারা বর্তমান শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে হিজবুত তাহরীর এর অধীনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই মিছিল ও সমাবেশ করে। পুলিশ সেই মিছিলে বাঁধা প্রদান করলে মিছিলে অংশগ্রহণকারী হিজবুত তাহরীর এর সদস্যরা পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে হাইকোর্টের দিকে যেতে থাকে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হলে তারা দ্রুত পল্টন থানাধীন বায়তুল মোকাররম মসজিদের দিকে গিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ইমতিয়াজ সেলিম, মঈন ও মো. জাকারিয়াসহ মিছিলে অংশগ্রহণকারী বিরুদ্ধে গত ১৪ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে হিযবুত তাহরীর। এর নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএর একজন শিক্ষক। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগ সরকার প্রেসনোট জারি করে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসা সংগঠনটি ফের আলোচনায় আসে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।
সরকার পতনের আন্দোলনে তারাও অংশ নিয়েছিল বলে দাবি করেন চলতি মাসের শুরুর দিকে গ্রেপ্তার হওয়া সংগঠনটির মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিনই ঢাকায় মিছিল করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এরপর আরও নানা দাবিতে মিছিলের পাশাপাশি ঢাকায় গোলটেবিল বৈঠকও করেছে সংগঠনটি। চট্টগ্রামেও পালন করেছে নানা কর্মসূচি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তার স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য `দীপ্ত শপথ` গুঁড়িয়ে হিযবুত তাহরীরের পোস্টারও লাগানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর এই মামলার এজাহারনামীয় ২ নম্বর আসামী হিজবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়কারী ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেফতার করেছিল সিটিটিসি।
আপনার মতামত লিখুন :