ঢাকা শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫

বৃদ্ধাশ্রমে কেমন আছেন মায়েরা

রামিম খান, ঝিনাইদহ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ০৬:৩৪ পিএম

বৃদ্ধাশ্রমে কেমন আছেন মায়েরা

ছবি-বর্তমান বাংলাদেশ।

বর্ণাঢ্য জীবনে শ্রম-ঘাম উপার্জন ব্যয় করেছে পরিবার ও স্বজনদের জন্য। সোনালী যৌবন পাড়ি দিয়ে এখন তারা অবসরে, বার্ধক্যে । জীবনের শেষ বেলায় পরিবারে ঠায় না হওয়ায় জায়গা হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। শেষ বয়সে এতোটুকুই ইচ্ছে আদরের সন্তানদেরর সাথে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার। কিন্তু অনেকে বাবা মা সেই সন্তানদের বোঝার পাত্র হয়ে আশ্রয় হয়েছে আপনজনহীন বৃদ্ধাশ্রমে।

ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের বৃদ্ধাশ্রম ও পূণর্বাসন কেন্দ্র। তিন বছর আগে এখানেই জীবন যাপন করছেন বিধবা নারী সোফিয়া খাতুন। নিজের আদরের ৪ সন্তান থাকলেও তাদের ঘরে ঠাঁই মেলেনি এই মায়ের। জীবন সায়াহ্নে সোফিয়ার আশ্রয় এখন বৃদ্ধাশ্রমে। সকালের নাস্তা,দুবেলা ভাত সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাচ্ছেন এখান থেকেই। কেবল আক্ষেপ,জীবনের শেষ অধ্যায়টা কাটাতে পারছেন না সাধ্য অনুযায়ী যতেœ গড়ে তোলা সন্তানদের সাথে। জীবনের পালাবদল দেখতে দেখতে শেষ বয়সে এসে কোন দুঃখ-ই যেন দুঃখ না সোফিয়া ব্গেমের কাছে। শুধু সোফিয়া খাতুনই নয়, এই প্রতিষ্ঠানে সেবা, যতœ ও ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখা অসহায় আরো ২০ জন মায়ের স্থান হয়েছে। জীবনের নানা পর্যায়,সন্তানদের স্মৃতিচারণা,আবেগময় সময়গুলো ভাগাভাগি করেন একজন আরেকজনের সঙ্গে। নিজেদের খেয়াল নিজেরাই রাখার চেষ্টা করেন এই কেন্দ্রে থাকা ২০ জন মা। নিজের মনের মধ্যে একা থাকার কষ্ট থাকলেও সন্তানদের প্রতি নেই কোন মায়ের অভিযোগ।

বৃদ্ধাশ্রমে থাকা সোফিয়া খাতুন বলেন,পাঁচ সন্তানের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন।তিন সন্তানারের একজন ঢাকায় চাকুরি করেন আর একজন ঝিনাইদহরে কোটচাঁদপুর জমি কিনে বাড়ি করেছেন। ছেলের বউ তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। যার কারণে তিনি প্রায় এক বছর রাস্তায় ঘুরেছেন। জামাইয়ের বাড়িতে থাকার ইচ্ছা থাকল্ওে জাইমায় ভালো না হওয়ায় সেখানেও ঠাই হয়নি। পরবর্তীতে তার মেয়ে উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের বৃদ্ধাশ্রম ও পূণর্বাসন কেন্দ্রে রেখে যান।

বৃদ্ধাশ্রম ও পূণর্বাসন কেন্দ প্রতিষ্ঠাতা ইসমতারা জানান,এই বৃদ্ধাশ্রমের যাত্রার গল্পটি একেবারেই ভিন্ন।গ্রামের একজন নারীর সঙ্গে তার ছেলের বউয়রে ঝগড়া হয় পরবর্তীতে ভাতের মধ্যে ছাই মিশিয়ে দেন ছেলের বউ সেই ক্ষোভে বিষ পান করেন ওই নারী এলাকাবাসী হাসপাতালে নিয়ে সুস্থ করেন ওই নারীকে। ওই ঘটনার পরেই সিধান্ত নেন ইসমতারা নিজেই কিছু করবেন। নিজের স্বামীর দেওয়া তিনশতক জমির উপর এলাকার বয়স্ক নারীদের সহায়তায় বৃদ্ধাশ্রম ও পূণর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন। ২০০৬ সালে প্রথমে বাশের বেড়া দিয়ে শুরু করলেও এখন মাথায় উপর ছাদ দিয়েছেন। এখন তার বৃদ্ধাশ্রমে ২০জন নারী আছেন। অনেকেই আশ্রয় নিতে আসেন জায়গা সংকট থাকার কারণে আশ্রয় দিতে পারেন না। ১ মাসে খরচ হয় সব মিলিয়ে খরচ হয় ১ লাখ টাকা।  

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!