শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ)। তিনি ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অঙ্গীকার করেন মোস্তাকুর।
মোস্তাকুর রহমান বলেন, এই সফলতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব অংশীজন এবং সব সাবেক শিক্ষার্থীকে ধন্যবাদ জানাই। যারা ৩৫ বছর ধরে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করেও রাকসু নির্বাচন পাননি, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করব। যারা জয়ী হতে পারেননি, তাদের সংখ্যা বেশি। আশা করব, তারাও আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন। বিজিতদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়েই এই ক্যাম্পাস গড়ে তুলব।
নবনির্বাচিত রাকসু ভিপি বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে রাকসু নির্বাচন থেকে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রাকসু হয়েছে। এখানে ছাত্রশিবির যেমন আন্দোলন করেছিল, পাশাপাশি অন্য ছাত্র সংগঠন, শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল। নানা জল্পনাকল্পনা, রাকসু বানচালকারী গোষ্ঠীর অপতৎপরতার বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এর আগে, আজ (শুক্রবার) সকাল পৌনে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এ ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম। এতে দেখা যায়, রাকসুতে ২৩ পদের মধ্যে ২০টিতেই জিতেছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল।
প্রাপ্ত তথ্যে ভিত্তিতে, ভিপি পদে সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম প্যানেলের শেখ নূর উদ্দীন আবির পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭ ভোট।
জিএস পদে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার পেয়েছেন ১১ হাজার ৫৩৭ ভোট, যেখানে শিবির সমর্থিত প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৯ ভোট।
এজিএস পদে সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী এসএম সালমান সাব্বির পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭১ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৪১ ভোট।
এছাড়া ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত জাতীয় নারী ফুটবলার নার্গিস খাতুন, আর সহ-ক্রীড়া সম্পাদক হয়েছেন আবু সাঈদ মোহাম্মদ।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম।
মহিলা সম্পাদক সাইয়্যেদা হাফসা, সহ-মহিলা সম্পাদক সামিয়া জাহান।
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বিএন নাজমুস সাকিব, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সিফাত আবু সালেহ।
মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ মোজাহিদ ইসলাম, সহ-মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক আসাদুল্লাহ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ তোফা (স্বতন্ত্র), সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম সায়েম।
বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মিয়া লস্কর, সহ-বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক মোহাম্মদ নয়ন হোসেন।
পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, সহ-পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক মাসুমা ইসলাম মুমু।
কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ দীপ মাহবুব, মোহাম্মদ ইমজিয়াল হক কামালী, সুজন চন্দ্র ও এবিএম খালেদ। এ ছাড়া সিনেট প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সালাহউদ্দিন আম্মার, মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, ফাহিম রেজা, আকিল বিন তালেব ও সালমান সাব্বির।
আপনার মতামত লিখুন :