ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে, চলছে ভোট গণনা। নির্বাচনে মোট ৮টি কেন্দ্রের ভোটার উপস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, টোটাল ভোট পড়েছে ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ভোট দিয়েছেন রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ৫ হাজার ৬৬৫ জন। এই হলের ৬৫ দশমিক ৫০ শতাং শিক্ষার্থী ভোট প্রয়োগ করেছেন।
নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিজয় একাত্তর হল, স্যার এ এফ রহমান হল ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে বিজয় একাত্তর হলের ৮৫ দশমিক ০২ শতাংশ, স্যার এ এফ রহমান হলের ৮২ দশমিক ৫০ শতাংশ ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৮৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন।
ইউল্যাব স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪ হাজার ৯৬ জন। এখানে ৬৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৭৫৫ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ৬৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ৬৭ দশমিক ০৮ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন।
কার্জন হলে ভোট দিয়েছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৭৭ জন। এর মধ্যে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ৮০ দশমিক ২৪ শতাংশ, অমর একুশে হলের ৮৩ দশমিক ৩০ শতাংশ ও ফজলুল হক মুসলিম হলের ৮১ দশমিক ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন।
উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে মাস্টারদা সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কবি জসীম উদ্দীন হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছেন। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ১৫৫ জন। এর মধ্যে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ৮৮ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ৭৫ শতাংশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৮৭ শতাংশ ও কবি জসীম উদ্দীন হলের ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোট প্রয়োগ করেছেন।
শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার ৪ হাজার ৮৫৩ জন। এর মধ্যে জগন্নাথ হলের ৮২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৮৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আমি জ্ঞানত নির্দিষ্ট কোনো দলের বা ঘরানার কারও প্রতি অনুরক্ত নয়। আমি সবাইকে নিয়ে চলতে চাই, এটাই আমার পথ।
মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হলে সিনেট ভবনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেনি তিনি।
উপাচার্য বলেন, ভোটার এবং প্রার্থী যে কোনো সংখ্যার বিবেচনায় এটি একটি বড় মাপের নির্বাচান। আপনারা সবাই দেখেছেন সারাদিন উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে। দুই তিনটি অভিযোগ এসেছে, প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এর বাইরে বড় মাপের কোনো অভিযোগ আমরা পাই নাই। যেগুলো পেয়েছি সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক দল দ্বারা প্রভাবিত কিনা- ছাত্রদলের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এগুলো পারসেপশনের ব্যাপার। যার যার পারসেপশন অনুযায়ী তিনি বিবেচনা করবেন। তাদের মতকে আমি সম্মান করি। আমি এগুলোর যুক্তি খণ্ডন করার প্রয়োজন মনে করি না।
ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, আমি যে কথাটা এখন বলব সেটিই আমার মত। আমার মত আপনার পছন্দ হতে পারে আবার নাও হতে পারে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অভ্যুত্থানের একটি নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব নিয়েছিল। হলগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক জায়গার কাজ স্থবির হয়ে পড়ে ছিল। আমরা সেগুলোর ঠিক করার চেষ্টা করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো সময় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আমি জ্ঞানত নির্দিষ্ট কোনো দলের বা ঘরানার কারও প্রতি অনুরক্ত নয়। আমি সবাইকে নিয়ে চলতে চাই, এটাই আমার পথ।
আপনার মতামত লিখুন :