ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

বালু আমার বাপের সম্পদ নাকি? টেন্ডার ছাড়া দিয়ে দেবো-ভোক্তভোগী রুহেলকে জেলা প্রশাসক ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম

বালু আমার বাপের সম্পদ নাকি? টেন্ডার ছাড়া দিয়ে দেবো-ভোক্তভোগী রুহেলকে জেলা প্রশাসক ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন

ছবি: বর্তমান বাংলাদেশ।


মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
 

মহাজন বাড়ির মালিক ভোক্তভোগী আসাদুর রহমান রোহেল এ ব্যাপারে একাধিক বার যোগাযোগ করলে জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, বালু আমার বাপের সম্পদ নাকি? টেন্ডার ছাড়া দিয়ে দেবো।
ভোক্তভোগী আসাদুর রহমান রুহেল জানান আমি বারবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেনের কাছে গিয়েছি। কিন্তু জেলা প্রশাসক আমাকে বলছেন, এইটা কি উনার বাপের নাকি। যে উনি আমি চাইবা মাত্রই দিয়ে দিব।
আমার বাপের জায়গা,আমার বাপের সম্পত্তি। আর উনি বলছেন উনার কি বাপের সম্পত্তি। আমার বাপের সম্পত্তি নিয়া উনি আমারে টানা-হেসরা করছেন। উনি বলেন আমি ডিসি। আপনার কাছ থেকে জ্ঞান নিয়া আমি ডিসি হই নাই। আপনি আমাকে জ্ঞান দিতে আসবেন না।
মৌলভীবাজার সদরের বাঁশ তলা মহাজন বাড়ির সামনে মুন নদী খননের স্তুপ করে রাখা বালুর কারনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। মারা যাচ্ছে মহাজন বাড়ির গাছ গাছালি। বাড়িটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন উদাসিন ভুমিকা পালন করছেন।
জানা যায়, মেসার্স ইউনাটেড ব্রাদার্স ষ্টেশন বাজার রংপুর ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত ১ বছরের জন্য মনু নদী খননের বালু স্তুুপ করতে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা চুক্তিতে লীজ নেন। পরবর্তীতে লিজকৃত ভাড়া পরিশোধ করেননি।এমনকি চুক্তির মেয়াদ না বাড়িয়ে বালুও অপসারন করেননি। ফসলি জমিতে বালুর স্তুুপ থাকার কারনে কোন প্রকার ফসল উৎপাদন করা যাচ্ছেনা। আশপাশের প্রায় ৭৬৫ টি সুপারি গাছ, ১৮০ টি আকাশি গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির আরো ২ টি মারা গেছে। কিন্তু চুক্তিকৃত জমির ভাড়া পরিশোধ না করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মুহিবুর রহমান নামে একজনকে বালু লিজ দেওয়া হয়। ইজারাদার মুহিবুর রহমান বালু বিক্রয় করার পর ১ লাখ ৬০ হাজার ঘনফুট  বালু থেকে যায়। এ অবস্থা থেকে মুত্ত পাওয়ার জন্য আসাদুর রহমান বালু তাকে লিজ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদনের কোন উত্তর পাননি। কিন্তু স্তুপকৃত বালু বৃষ্টিতে ছড়িয়ে  পরিবেশ পড়েছে হুমকির মুখে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: মজবিল আলী, সাদ্দাম হোসেন জানান,  আমরা গরীব মানুষ মহাজন বাড়ির যে জায়গা টা আমরা খেত করে খাই। এখন আমরা এই জায়গাটায় খেত- গিরস্তি করতে পারিনা বালু তোলার কারনে। বালু তোলার কারণে সব জায়গা নষ্ট হয়ে গেছে। বালু তোলার সময় বলেছির ১ বছরের মধ্যে খালি হযে যাবে। কিন্তু আজ দেড় ২ বছর হলেও বালু এখনও সরানো হয়নি। ফলে বাড়ি ঘর নষ্ট হই যাচ্ছে। বালু বাড়ির উওর, দক্ষিণ, পূর্ব পাশে। অর্ধেক বালু নেওয়া হলেও অর্ধকটা নেওয়া হয়নি। বালুর জন্য আমরা এখন কৃষি কাজ করতে পারি না।
ভোক্তভোগী আসাদুর রহমান রুহেল বলেন, আমাদের বাড়িতে বালু রাখার জায়গায় দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন মানুষ আমাদের হুমকি দামকি দেয়।আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে বাইরে যেতে পারি না। বালুর জায়গায় দিয়ে আমরা অপরাধ করছি। বালু যদি তাঁহার বাপের না হয়। তাহলে আমার বাপের সম্পদ নিয়ে কেন টানাটানি করছেন। বালু লুটে নেওয়ার জন্য কিছু ব্যাক্তি আমাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। সরকারের বালু রক্ষা করতে আমি থানায় জিডি করেছি। নিজের ৭ বিঘা ফসলি সহ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমার বাড়ি ঘর। আমার কৃষি জমিন নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আমি বারবার গিয়েছি। তারা বলেন এখন বিষয়টি আর আমাদের কাছে নেই। এখন ডিসি স্যারের কাজ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তাজ উদ্দিন বলেন, না, এখন ও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই। না এখন ও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নাই।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বিভাগ, বাপাউবো, মৌলভীবাজার মোঃ খালেদ বিন অলীদ বলেন আপনি যেটা বলছেন, যখন প্যাকেজ ছিলও। সে তখন  একটা প্যাকেজ নিল। বালু রাখার জন্য ছিল টিকাদার। ওই টিকাদারের সাথে যদি ওই ব্যক্তির মালিকানার যদি চুক্তি থাকে তাহলে ওই চুক্তি আমার কাছে নিয়ে আসেন আমি চেষ্টা করব। কিন্তু কাজ টা বর্তমানে শেষ হয়ে গেছে। যদি আমার ঠিকাদারের কাছে সিকুরেটি জমা থাকে তাহলে আমি চেষ্টা কবর তার প্রতিফলন দেওয়ার। বালু আমরা  যেটা,ওইটা ডিসি অফিসের মাধ্যমে যেটা, সেটা মানতে হবে। যে রানিং এয়ার তারা পায়।
ভোক্তভোগী আসাদুর রহমান রোহেল এর বিষয় জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেনের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি ।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!