ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
(নওগাঁর আত্রাইয়ের বান্দায়খাড়া ডিগ্রী কলেজ)

অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ,,

বিকাশ চন্দ্র প্রামানিক, নওগাঁ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৯:২১ পিএম

অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ,,

ছবি: বর্তমান বাংলাদেশ।

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া ডিগ্রী কলেজের 
অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন অনিয়ম ও দূর্নীতিতে রয়েছেন সবখানেই। তাঁর বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ ব্যপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এসব অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগটি দায়ের করেছেন, ওই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ম্যানিজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মো: মামুনুরু রশীদ সিদ্দীক।

দায়েরকৃত অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, এলাকার মধ্যে বান্দাইখাড়া ডিগ্রী কলেজ একটি সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের ব্যপক অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে বর্তমানে কলেজটি অন্ত:সার হয়ে পড়েছে। এতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, পছন্দের প্রতিনিধি হিসেবে ম্যানিজিং কমিটিতে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সভাপতি নির্বাচন এবং বিদ্যুৎসাহীর অনুমোদন না পেলেও তাকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন তিনি। এছাড়া কলেজের নিজনামীয় দুই একর ১৭শতক আবাদী জায়গার কোন হিসাবপত্র গত ১৯৯৫সাল থেকে ২০২২সাল পর্যন্ত দেন নাই। অভিযোগ তুলে বলা হয়,অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ২০২০সালে 
কলেজের মেহগুনী গাছ কর্তন করে মোট ৭৯টি কাঠের গুল একটি “স“ মিলে রাখেন। এর পর সেখান থেকে তিনিসহ আরো দুইজন শিক্ষক মিলে প্রায় ২৮টি কাঠের গুল চুরি করে নেন।

এঘটনা জানাজানি হলে কলেজ কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদন দাখিল অন্তে ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বন কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় মোট দুই লক্ষ ৬০হাজার টাকা জরিমানা সাপেক্ষে সাধারণ ক্ষমার আওতায় এনে বিষয়টি নিস্পত্তি করা হয়। কিন্তু এর পরেও “স“ মিলে রাখা আরো ৫১টি কাঠের গুল আত্মসাৎ করে অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন।

বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ সিদ্দীক অভিযোগে আরো বলেন, কলেজে ভবন নির্মানে দূর্নীতি. ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট থেকে আদায় করা বিভিন্ন ফিসের সিংহভাগ হিসেব না দিয়ে আত্মসাৎ এবং ওই কলেজের ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হান্নান আলী সরদারের ৩মাসের বকেয়া বেতন তুলে আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ওই কলেজের একজন হিসাব সহকারী ও আরো একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়গুলো সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ সিদ্দীক।

ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হান্নান আলী সরদার জানান, আমার তিন মাসের বিল তুলে 
আত্মসাৎ করেছেন অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন। কিন্তু তাকে বলার পরেও স্বীকার করেননি। পরে কলেজের ফাইলে আমার বিল তৈরী করে বেতন উত্তোলনের প্রমান পাওয়া গেছে। তার পরেও তিনি বেতনের টাকা ফেরৎ দেননি।

কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, নীতিমালা অনুসরণ করেই জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় হতে সভাপতি নির্ধারন করা হয়েছে। তবে বিদ্যুৎসাহীর পদটি পাশ না হলেও দ্রুতই পাশ হয়ে বের হবে। তাই 
তাকে নিয়ে মিটিং করেছি। তিনি ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের তিন মাসের বেতন উত্তোলন বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে জানান। এছাড়া মেহগুনি গাছের কাঠ বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গাছ বিক্রির দায়ে ২লাখ ৬০হাজার টাকা নয়,জরিমানা করেছিল 
এক লক্ষ ৭০হাজার টাকা। যা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছি। আর অবশিষ্ঠ ৫১টি কাঠের গুল এখনো “স“ মিলে আছে। তবে আরো যে বিষয়গুলো নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয় বলে দাবি করেন অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন।

আত্রাই উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান জানান, নানা অভিযোগের বিষয়ে ওই কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রমানিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!