কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: মমিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমন অভিযোগ থাকার পরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে কিশোরগঞ্জ সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে শহরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, বৈধ ইট ভাটা উচ্ছেদেও ঘুষ, অবৈধ ইট ভাটা রক্ষাতেও ঘুষ” এই নীতিতে চলছেন কিশোরগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মমিন ভুঁইয়া। বিপুল অংকের ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে কখনও বৈধ ইট ভাটাকে রাতারাতি অবৈধ দেখিয়ে কোন রকমের নোটিশ প্রদান না করে অতি গুপনীয়তা রক্ষা করে উচ্ছেদ করা হয়, কখনও অবৈধ ও শিক্ষা প্রতিষ্টান ঘেঁষা ইট ভাটাকে বিভিন্ন চল চাতুরী করে উচ্ছেদ যোগ্য ইট ভাটা কে রক্ষা করে। তারই উদাহরণ কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার কুর্শা গ্রামের ইট ভাটা কামাল ব্রিকস থেকে ৫০০- ৬০০ মিটার দূরে বৈধ তালিকায় থাকা আলতাফ ব্রিকসের চিমনি কোনো নোটিশ ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ ছাড়পত্র, লাইসেন্স কোনোটাই নেই, বৎসরের পর বৎসর ছাত্র শিক্ষক এলাকাবাসীর বহু অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অনেক গুলো শিক্ষা প্রতিষ্টান ঘেঁষে বহাল তবিয়তে মেসার্স কামাল ব্রিকস। ব্যাবসায়িক দ্বন্দের জের ধরে অবৈধ ইট ভাটা কামাল ব্রিকস এর মালিক পরিবেশ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ এর সহকারী পরিচালক মমিন ভূঁইয়াকে বিশাল অংকের উৎকোচ দিয়ে অতি গোপনীয়তা রক্ষা করে বিনা নোটিশে প্রায় ২২ বৎসর যাবৎ সম্পূর্ণ বৈধভাবে পরিচালিত ইট ভাটা মেসার্স আলতাব ব্রিকস কে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করে। পাশেই অবৈধ ইট ভাটা মেসার্স কামাল ব্রিকস যা অনেককগুলো শিক্ষা প্রতিষ্টান ঘেঁষা, যার কোন পরিবেশ ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসন কর্তৃক লাইসেন্স বা অগ্নি সংযোগের অনুমোদন কোনটাই নেই সেটা বহাল তবিয়তে টিকে আছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় মোট ইট ভাটার সংখ্যা ১১৫ টি, এর মধ্যে ৪৭ টি ইটভাটা অবৈধ। বৈধ তালিকায় ৬৮টি, যেগুলোর ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায় বৈধ তালিকা ভুক্ত ৫০ টি ইটভাটার মধ্যে ৩৭ টি ইটভাটার ৫০ মিটার থেকে ৭০০ মিটার এর ভিতরে শিক্ষা প্রতিষ্টান আছে। ইট ভাটা প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ও নীতিমালা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্টানের ১ কিলোমিটারের ভিতর কোন ইট ভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ ৫০ মিটার থেকে ৭০০ মিটার এর ভিতর অনেকগুলো ইট ভাটা বহু বৎসর যাবৎ পরিচালিত হচ্ছে এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ নিয়মিত ছাড়পত্র দিয়ে আসছে। তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায় ১১৫ টি ইট ভাটার মধ্যে প্রায় ৯০ টি অবৈধ। অবৈধ ইট ভাটা গুড়িয়ে দেবার জন্য সরকার ও আদালতের কঠোর নির্দেশনা থাকার পরেও সেগুলো উচ্ছেদ না করে বরং সরকারি আইন এবং নীতিমালা উপেক্ষা করে বিপুল অংকের ঘুষ বাণিজ্যের হাতিয়ার হিসাবে টিকিয়ে রেখেছেন মমিন ভূইয়া।
তারা আরও বলেন, পরিবেশ, জনস্বাস্থ ও শিক্ষা প্রতিষ্টান রক্ষায় উল্লেখিত অভিযোগ তদন্ত করে মোঃ মমিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ মমিন ভূঁইয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো মিথ্যা। যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানাতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :