ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

৭০০ শিক্ষার্থীর নামে মামলা করা শিক্ষিকাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১০:১০ এএম

৭০০ শিক্ষার্থীর নামে মামলা করা শিক্ষিকাকে অধ্যক্ষ নিয়োগ

 

  

জুলাই আন্দোলনে তিতুমীর কলেজের ৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী এবার নিয়োগ পেলেন অধ্যক্ষ হিসেবে। কলেজটির অধ্যাপক মালেকা আক্তার বানুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে নিয়োগ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

গত ২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তারা তাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।

 

জানা যায়, গত বছরের ২৫ জুলাই তিতুমীর কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষিকা মালেকা বানু বাদী হয়ে বনানী থানায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কলেজ ভাঙচুরের মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, একই বছরের ১৮ জুলাই সরকারি ছুটি থাকায় ক্লাস ও ছাত্রাবাস বন্ধ ছিল। সেদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে অজ্ঞাতনামা বিএনপি, জামায়াত, শিবির ও তার অঙ্গ সংগঠনের দুষ্কৃতকারীরা কলেজে তাণ্ডব চালায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খন্দকার সাইমা সুলতানা জানান, আমরা চাই না তিনি আমাদের অধ্যক্ষ হন। তিনি ৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া আমাদের জন্য অবমাননাকর।

শিক্ষার্থী সাদেকুর নাহার কবিতা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী জানান, ফ্যাসিবাদের দোসর অধ্যাপক মালেকাকে মেনে নেবে না শিক্ষার্থীরা। এ সময় তার নিয়োগের আদেশটি বাতিলের দাবি জানান। নইলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যাবে জেলা ছাত্রদল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র প্রতিনিধি বায়েজিদুর রহমান সিয়াম জানান, ফ্যাসিবাদের দোসর অধ্যক্ষকে মেনে নেবে না শিক্ষার্থীরা। তার নিয়োগটি দ্রুত বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা দ্রুত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মরকলিপি দেব।

শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মেহেরুন্নেছা মুনিয়া জানান, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসলে একদিনের জন্যও তাকে অফিস করতে দেওয়া হবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে নিয়োগ পাওয়া নতুন অধ্যক্ষ মালেকা আখতার বানুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, যখন মামলার বাদী হওয়ার জন্য কেউ রাজি হচ্ছিল না, তখন অধ্যক্ষের কথামতো বিগত সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি মামলার বাদী হতে রাজি হই। তবে আমার জানা ছিল না, শিক্ষার্থীরা এই মামলার আসামি। আমি একজন শিক্ষক ও মা হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যেতে পারিনি। আমি মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!