ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

স্ত্রীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে ১১ ঘণ্টার মাথায় মারা গেলেন স্বামীও

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৩:২১ পিএম

স্ত্রীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে ১১ ঘণ্টার মাথায় মারা গেলেন স্বামীও

ছবি সংগৃহীত

৪৫ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন জলিল মাস্টার ও আঞ্জুয়ারা বেগম দম্পতি। উদ্দেশ্য ছিল সুখে দুঃখে সারাজীবন একসাথে কাটাবে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবে একে অপরের পাশে। তাদের দুজনের ইচ্ছেই পূরণ হয়েছে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে মৃত্যু হয়েছে ওই দম্পতির।

এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিয়েছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাদিবাড়ী গ্রামে। স্ত্রীর মৃত্যুর মাত্র ১১ ঘণ্টা পর মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁর স্বামী।

ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) কাদিবাড়ী গ্রামে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাদিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. জলিলুর রহমান জলিল মাস্টার (৭৫) ও তাঁর স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৬৫) দীর্ঘ ৪৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে ছিলেন একে অপরের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তাঁরা ছিলেন পরস্পরের ছায়া, পরস্পরের ভরসা।

কিন্তু হঠাৎই সেই ছায়া সরে যায়। শুক্রবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আঞ্জুয়ারা বেগম। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে গভীর শোকে ভেঙে পড়েন স্বামী জলিল মাস্টার। বিকেল থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাতে তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টা ২৫ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মুহূর্তেই শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো এলাকায়।
একই পরিবারের দুই মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে যায় গ্রামবাসী।

তাঁদের সংসারে দুই ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। এখন সেই ঘরে পাশাপাশি রাখা দুটি কফিন যেন নীরবে বলছে,জীবনভর পাশাপাশি থেকেছেন, মৃত্যুতেও একসঙ্গে রয়ে গেলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “ওদের ভালোবাসা ছিল সত্যিকার। একে অপর ছাড়া তারা কখনও বাঁচতে পারতেন না। তাই হয়তো একজন চলে যাওয়ার পর আরেকজনও থাকতে পারেননি।”

ছোট ছেলে মো. রাকিবুল হাসান রকি বলেন,“মা-বাবাকে একসঙ্গে হারিয়ে এতিম হয়ে গেছি। মা হঠাৎই মারা যান। বাবা হালকা অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ভীষণ ভেঙে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর বাবা-ও চলে গেলেন।”

মৃত্যুতেও একসঙ্গে থাকা এই দম্পতির গল্প এখন পুরো গ্রামে আলোচনার বিষয়। মানুষ বলছে,ভালোবাসা কখনও মরে না, বেঁচে থাকে মানুষের হৃদয়ে।

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!