ঢাকা বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁওয়ে রেলওয়ের জমিতে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান,উচ্ছেদের দুইদিন আগে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁওয়ে রেলওয়ের জমিতে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান,উচ্ছেদের দুইদিন আগে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সাতগাঁও  রেলওয়ের স্টেশনের দুইপাশে গড়ে উঠা তিনশতাধিক অবৈধ দোকান পাট ও বাসা বাড়ি উচ্ছেদ করা হয়েছে।  
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১ থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত একটানা  এ উচ্ছেদ অভিযান চলে। ত
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ- সম্পতি কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ এর নেতৃত্বে এ দীর্ঘ চারঘন্টা ব্যাপী এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এ অভিযানে অংশ নেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালেয়র সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইফ্রাহিম ইকবাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার তানভীর, শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো.আমিনুল ইসলাম, রেলওয়ের সার্ভেয়ার দীপক মল্লিক, কানুনগো কাওছার হামিদ,রেলওয়ের ইন্জিনিয়ার জাকির হোসেনসহ মৌলভীবাজার জেলার রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স,শ্রীমঙ্গল থানা ও রেলওয়ে জিআরপি পুলিশ এবং আর এন্ড বি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। 
সকাল ১১ থেকে বুলডোজার দিয়ে সাতগাঁও রেল-স্টেশনের আমরাইল ছড়া রোড,সিন্দুরখান রোড,রেলওয়ে কলোনী,সাতগাঁও বাজারে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল বাসার স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়। 
অভিযানকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগীয় ভূ- সম্পত্তি কর্মকর্তা  ও ডেপুটি কমিশনার (রেলওয়ে ভূমি ও ইমারত)  মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন- "একটি আলীশান বাড়িসহ প্রায় তিনশরমতো দোকানপাট এবং আর কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙ্গা হয়েছে।  প্রায় পাঁচ একরের মতো জমি উদ্ধার হয়েছে। যেহেতু আজকে আর সম্ভব না। তাই ক্লোজ করে দিয়েছি। আর বাকি যেটুকু থাকলো, অনেকই তো আছে এখনো ভাঙ্গার বাকি। পরে একটা ডেট ঠিক করে আবার ভাঙ্গা হবে।
সময়বুঝে পরবর্তী ডেট দিবো। 
তিনি বলেন- লিজ প্রক্রিয়া আইনের ভিতরে হবে। এজ পার ল অনুযায়ী যারা লীজ  নিতে চায় আইনের সুযোগ থাকলে দেয়া হবে। না হলে হবে না। আইনের বাহিরে কিছু নাই।
অভিযানের দুইদিন আগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সার্ভেয়ার কানুনগোর বিরুদ্ধে
অভিযানের দুইদিন আগে 
আগে অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে নিম্নে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ  ৭ লাখ পর্যন্ত দোকানকোটার পজিশন অনুযায়ী  ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে কানুনগো সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে।  
১২ আগস্টকে উচ্ছেদ অভিযান দিনক্ষণ ঠিক করে তারা  অবৈধ দখলকার চিহ্নিত করে  সাতগাঁও বাজারে দুইদিন উচ্ছেদ অভিযান চালনোর মাইকিং করা হয়। এর পর ব্যবসায়িরা 
অভিযানের ভয়ে প্রতিটি দোকানের পজিশন অনুযায়ী এক লাখ বিশ হাজার  দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ের সার্ভেয়ার দীপক মল্লিক ও কানুনগো কাওছার হামিদের বিরুদ্ধে।  
ঘুষের অডিও প্রমাণ
দৈনিক আমার দেশ এর কাছে ঢাকা বিভাগের রেলওয়ের এস্টেট বিভাগের সার্ভেয়ার দীপক মল্লিকের একটি অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে। ওই রেকর্ডে  রিপন নামের একজন ব্যাবসায়ি ওই সার্ভেয়ারকে  স্বপনের দোকান না ভাঙ্গার জন্য কাছ থেকে সাত লাখ  টাকার অফার দেয় ওই টাকা লেনদেনের জন্য বাজারের সিন্দুরখান রোডের ইঞ্জিনিয়ার রাসেলের সাথে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন।  আরেকটি অডিও বাজারের আমরাইল ছড়া সড়কের ব্যবসায়ি গিয়াস উদ্দিন তার দুই সাটারের দোকান বাঁচাতে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা ঘুস দেন। কাজী দুলাল ১ লাখ ২০ হাজার, উমর আলী ১ লাখ বিশহাজার টাকা ঘুস নেন। রেলওয়ে কলোনীর জন্য ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন রেলের জমি ভোগদখল কারী গেদা মিয়ার কাছে।
অভিযোগ রয়েছে, অভিযানের তালিকাভুক্ত অনেক দখলদারের কাছ থেকেই বিপুল অঙ্কের অর্থ আদায় করা হয়—কেউ কেউ সরাসরি, আবার কেউ ‘মধ্যস্থ ব্যক্তি’র মাধ্যমে টাকা দিতে বাধ্য হন। আর এ টাকা নেন শনি ও রবিবার শ্রীমঙ্গলের রেলওয়ের রেস্ট হাউজে অবস্থান করে কানুনগো কাওসার হামিদ ও সার্ভেয়ার দীপক মল্লিক।
জানতে চাইলে দীপক মল্লিক ও কাওসার হামিদ  ঘুস নেয়ার বিষয় অস্বীকার করে বলেন রেস্টে হাউজে বসে আমরা শুধু বানিজ্যিক লাইসেন্সের খাজনার টাকা ব্যাংক মারফত নিয়েছি। শুধু সাতগাঁওয়ের না মাইজগাঁও, শমসের নগরসহ বিভিন্ন স্থানের লোকজন এসেছিলেন।

 

বর্তমান বাংলাদেশ

Link copied!