রাজধানীর দক্ষিণখান থানার মোল্লারটেক এলাকার সোয়ান গার্মেন্টসের পেছনে রাজউকের নকশা ও আইন লঙ্ঘন করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন মফিজ উদ্দিন গং। নির্ধারিত জায়গা না রেখে এবং প্রতি তলায় অতিরিক্ত আয়তন বৃদ্ধি করে ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
জানাগেছে, এসব ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করছেন রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তাদেরই একজন পরিদর্শক সোহেল রানা।
সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ২৪ কাঠা জমিতে রাজউকের অনুমোদন ব্যতীত বেজমেন্ট ছাড়া ৮ তলা আবাসিক ভবনের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করেন । প্রতি তলায় ১০,৩৬৮ স্কয়ার ফিট কাজ করার অনুমতি থাকলেও ১০,৭৬৮ স্কয়ার ফিট করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। হিসাব অনুযায়ী প্রতি তলায় ৪০০ স্কয়ার ফিট করে বৃদ্ধি করলে মোট বৃদ্ধির পরিমাণ দ্বারায় ৩২০০ স্কয়ার ফিট।
ইতোমধ্যে চার তলার কাজ শেষ করে পাঁচ তলার কাজ শুরু করেছেন।
ভবন মালিক সূত্রে জানা যায়, চারপাশে প্রয়োজনীয় ফাঁকা জায়গা না রেখেই ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এমনকি নির্মাণস্থলে কোনো নিরাপত্তা জাল (সেফটি নেট) বা সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। গত ১ মে ২০২৫ সরজমিনে গিয়ে এসব অনিয়ম দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভবন মালিক মফিজ উদ্দিন বলেন, "নকশা অনুযায়ী নয়, ওয়ার্কিং প্ল্যানে করছি। রাজউকের নিয়ম মানলে কেউ ভবন করতে পারবে না। চেষ্টা করছি সমাধানের। আমাদেরও সাংবাদিক আছে, নিউজ করে দেখেন কী করতে পারেন।"
এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজউক ইন্সপেক্টর জানান, “আমরা ইতোমধ্যে দুটি নোটিশ দিয়েছি। মালিকপক্ষ নকশা জমা দেয়নি। পরবর্তী ধাপে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হবে। বর্তমানে মোবাইল কোর্ট চলমান আছে, যেকোনো সময় অভিযান হতে পারে।”
উল্লেখ্য, রাজউক অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ ধরনের প্লটে ভবনের চারদিকে ফাঁকা জায়গা রাখা এবং সবুজায়নের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি ছেড়ে দিতে হয়। এছাড়া, বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট, ১৯৫২, টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৩, এবং ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা, ২০০৮ ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড, ২০২০ অনুযায়ী এসব শর্ত বাধ্যতামূলক।
তবে মফিজ উদ্দিন গং সব আইন উপেক্ষা করে অতিরিক্ত আয়তনে নির্মাণ করে যাচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে জনসাধারণের চলাচল, সুরক্ষা ও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজউকের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আরও তৎপরতা এবং যথাযথ আইনি পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আপনার মতামত লিখুন :